Posts

Showing posts from May, 2018

জবাইঘর

Image
জানেন, আমাদের বাসায় একটা জবাইঘর আছে। খুব চমকে গেলেন শুনে? চমকানোর মতো ব্যাপারই বটে। মানুষের বাসায় থাকে হাওয়াঘর, জলসাঘর, আরো কতো আদুরে বিলাসী কক্ষ, আমাদের ক্ষেত্রে ওসবের বালাই নেই। ওসব সুসজ্জিত, সুরভীময় ঘরগুলি আপনাদের নান্দনিক রুচির প্রকাশ করে, আর আমাদের জবাইঘরের নাম শুনলেই কেমন একটা আতঙ্কের শিহরণ বয়ে যায় শিরদাড়া দিয়ে তাই না? তবে আপনাদের আশ্বস্ত করছি, ব্যাপারটা যত ভয়ানক ভাবছেন, ততটা না মোটেও। প্রতি মাসে একবার একজন অভিজ্ঞ কসাই এসে আমাদের পরিবারের একজনকে লটারির মাধ্যমে বেছে নিয়ে তার গলায় চালিয়ে দেয় চাপাতি। কিছুক্ষণ খুব ধস্তাধস্তি আর চিৎকার চলে। তারপর... না যা ভাবছেন তা নয়। জবাইকৃত ব্যক্তির গলায় আবার সেলাই করে দেয়া হয়। এবং সে দিব্যি হেসে খেলে বেড়াতে থাকে। ভাবছেন এটা কী করে সম্ভব? কেন সম্ভব হবে না? আমাদের পারিবারিক কসাই জবাই করা ছাড়াও সেলাইয়েও বেশ পটু। আজকে ফেব্রুয়ারির দুই তারিখ। তার আসার সময় হয়ে এসেছে। আমি যাই এখন, কেমন? প্রার্থনা করবেন যেন এবার আমার নাম লটারিতে ওঠে। আমার গলা থেকে গলগল করে রক্ত বেরুবে, আর আমি পরিশূদ্ধ হবো রক্তস্নাত হয়ে। কত পাপ জমে আছে! * -সব ঠিকঠাক? -হ্যাঁ। -সব টিপট

পাথরের রূপকথা

Image
জমিরুদ্দীন একটি পাথর নিয়ে এসেছে। আংটিতে পরার দামী পাথর না। একটি গম্ভীর চেহারার বড়সড় পাথর। বাসায় বয়ে আনতে তাকে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। সে খুব একটু শৌখিন মানুষ এমনটা তার নিন্দুকেরাও বলবে না। তবে তাতে তার কী এসে যায়! পাথরটা কেনার মূল উদ্দেশ্য ঘর পাহারা দেয়া। তাদের এলাকায় চোর-ছ্যাচ্চোর বড় বেড়ে গেছে। একজন দারোয়ান আছে অবশ্য। সে তার জীর্ণ শরীরে একটি ধোপদুরস্ত উর্দি চাপিয়ে রাত-বিরেতে হুইসেল বাজিয়ে চলে। সেই হুইসেলের সাথে রাতজাগা কুকুরের দল সংগত করে বটে, তবে তাতে চোর-ছ্যাচ্চোরদের খুব একটু অসুবিধে হয় বলে মনে হয় না। আর কিছুদিন পরে হয়তো বা তারা ছিচকে চুরি না করে ডাকাতি শুরু করবে। সেক্ষেত্রে কুকুরের দল আর বয়োবৃদ্ধ দারোয়ানের ওপর ভরসা করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তার দরকার শক্তিশালী কিছু। এজন্যেই পাথরটি সে ন্যে এলো। তবে সে পরিবারের সদস্যদের তার উদ্দেশ্য জানায় না। সবাই এটাকে তার নিছক একটা খেয়াল হিসেবে ধরে নেয়। মা বলেন,  - কী আজাইরা শোপিস আনায়া থুইছস? খামাখা ঘরের স্পেস নষ্ট!  জমিরুদ্দিনের ভাই বোনেরা অবশ্য এই কলহে যোগ না দিয়ে তার খেয়ালকে প্রশ্রয় দেবার ঔদার্য দেখায়। বড় ভাই হিসেবে জমিরুদ্দিন প্রাপ্

ছহি রকেট সায়েন্স শিক্ষা

Image
রকেট (ইংরেজি: Rocket) একটি বিশেষ ধরনের প্রচলন কৌশল। এটি এমন এক ধরনের যান যেখানে রাসায়নিক শক্তির দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট উৎপাদকগুলিকে প্রবল বেগে যানের নির্গমন পথে বের করে দেয়া হয় এবং এর ফলে উৎপন্ন ঘাতবলের কারণে রকেট বিপরীত দিকে প্রবল বেগে অগ্রসর হয়। এক্ষেত্রে নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র অনুসৃত হয়। (সূত্র উইকিপিডিয়া) ওয়ার্নার ভন ব্রাউন (মার্চ 23, 1912 - জুন 16, 1977) ছিলেন জার্মান রকেট সায়েন্টিস্ট, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার ও স্পেস আর্কিটেক্ট । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির এবং যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আমেরিকার রকেট প্রযুক্তির উন্নয়নের এক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ত্ব ছিলেন তিনি । (সূত্রঃ সামহোয়্যার ইন ব্লগ, ব্লগার আপেল বেচুম)। আরে ‘অমুক’ কাজটা তুমিও পারবে, দিজ ইজ নট আ রকেট সায়েন্স! আরে তুমি পারবে। এটা রকেট সায়েন্স না। এটা যে তমুক অমুক উদ্দেশ্যে করেছে তা বুঝতে রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না! (বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শ্রেণীর, বিভিন্ন রকম মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন জনের প্রাপ্ত উপদেশ)। উইকিপিডিয়া এবং ব্লগের আর্টিকেল দুটি কেউ একজন, অথবা অনেকেই পড়ছিলো। আর পড়ার কারণ হলো পরবর্তীতে উল্লিখ

প্যানিক এ্যাটাক, প্যানিক ডিজঅর্ডার, যুদ্ধটা কঠিন, কিন্তু লড়তে হবে আপনাকেই!

Image
প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত একজন নাম না জানা মানুষ তার অজানা বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে একটি মর্মস্পর্শী চিঠি লিখেছিলেন। সেটার অনুবাদ করলাম। অনুবাদ করাটা জরুরী ছিলো। কারণ আমিও ভুক্তভোগী, আমি লড়ছি এখনও। আমি সাহায্য করতে চাই আপনাদের... “আমার অবস্থাটা কখনই বলে বা লিখে বোঝানো সম্ভব না। তবুও আমি তোমাকে কিছু বলবো আজ। বলবো আমার এই যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা ক্লান্ত মনটা নিয়ে। যুদ্ধ করে টিকে থাকা গৌরবের, আবার ক্লান্তিরও। আমার ক্লান্তির কিছুটা ভাগ তুমি নেবে? অনেকবার হয়তো শুনেছো, আমি প্যানিক ডিজঅর্ডারে ভোগা একজন মানুষ। এই অদ্ভুতুরে রোগটা আমাকে গুটিয়ে দিয়েছে অনেকটাই ভেতরে ভেতরে। আমাকে দেখে যেমন ইন্ট্রোভার্ট আর লাজুক ভাবো, আমি কিন্তু তেমন না। বাইরে যেতে আমার ভালোই লাগে। কিন্তু ঐ যে একটা ভয়! কীসের ভয়? আমি জানি না। শুধু জানি যে যেকোনো সময় আমাকে ভয়টা জেঁকে ধরতে পারে। তখন আমার কিছুই করার থাকবে না। এই বোধটা আমাকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়। সত্যিকারের আমি ঢাকা পড়ে যাই ভয়ের দেয়ালে। আমি তোমায় মায়ায়, স্নেহে ভরিয়ে দিতে পারি, জানো? কিন্তু তোমাকে দেখে আমি মাঝেমধ্যেই ভয়ংকর নার্ভাস হয়ে যাই। এটা তোমার দোষ না, তোমাদের দোষ ন