Posts

Showing posts from February, 2019

দিনান্তিকা

(১) মিরাজ দ্রুতপায়ে হাঁটছে। সে ধীরে হাঁটতে পারে না। ধীরে হাঁটা মানে পিছিয়ে পড়া। সে ঘুমে থাকে না, তার হিসাব থাকে।  তবে তার মন কিছুটা বিক্ষিপ্ত। নানারকম অদ্ভুত ভাবনা আসছে, যাচ্ছে! মিরাজ একজন সচেতন মানুষ। সে চোখ-কান খোলা রাখে। তাই নানা বিষয় চলে আসে।  এই যেমন সেদিন একজনের মাথার ওপর গাছ ভেঙে পড়লো। বেচারা  বাসা থেকে বের হয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছিলো ধীরে সুস্থে, রয়ে সয়ে। তখন একটা গম্ভীর, প্রাচীন গাছ এই ফাজলামিটা করলো। সেদিন  বেশ বাতাস ছিলো, বাতাসের সাথে ছিলো মেঘের  স্মরণিকা। তাই বলে এভাবে ভেঙে পড়তে হবে?  একজন মানবসন্তানের ওপর কেন শতবর্ষী বৃক্ষ পতিত হবে? প্রাচীন বৃক্ষের এমনতর খামখেয়ালী আচরণে মিরাজের ভেতরটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। লোকটার নাম মনে  নেই তার। খবরের কাগজে অদ্ভুত দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারীদের নাম মনে রাখতে নেই। মিরাজের মাথায়  বৃক্ষ এবং মৃত্যু বিষয়ক এই দুর্যোগের কথা এমনি এমনি আসে নি। সে নিজেও অফিসে যাচ্ছিলো, এবং ওপরে একটা গাছ ছিলো। যদিও তেমন বাতাস নেই আজ, তারপরেও বুকটা একটু হলেও কেঁপে ওঠে বৈকি! তবে মিরাজ ভীরু নয়। সে গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। অনুযোগ নিয়ে তাকালো ওপরে। “জনাব, আপনি নিশ্চয়

সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ

লোকটার ব্যবসা বুদ্ধি দারুণ। অবশ্য ব্যবসা বুদ্ধি মানে যদি ভেবে থাকেন যে সে টেকো লোকের কাছে উন্নতমানের শ্যাম্পু গছিয়ে দেয়ার উপায় জানে তাহলে অবশ্য ভুল করবেন। তার ব্যবসাটা বেশ জমজমাট হলেও সেটার ধরণ-ধারন একটু আলাদা। ব্যবসার কাঁচামাল, পুঁজি, বিনিয়োগ, লাভ সব যদি এখন সবিস্তারে বলতে যাই, তাহলে বিষম খেতে পারেন। ধীরে ধীরে বলি বরং, ঠিক আছে? কথায় আছে না, স্লো এন্ড স্টেডি উইনস দ্যা রেস! রেসে জিততে খুব ইচ্ছে করছে? তাহলে থাক! এখানে আসলে জেতা-হারার কোনো ব্যাপারই নেই। তবে হ্যাঁ, বুঝতে পারছি যেহেতু এখানে লাভের কথা আছে, ব্যবসার কথা আছে, বিনিয়োগের কথা আছে, সেহেতু এই কপাটরুদ্ধ অস্থির সময়ে শর্টকাট কোন পদ্ধতি যদি মুফতে জানা যায়, তার প্রতি আগ্রহ জন্মাতেই পারে। আপনাদের আগ্রহটা বেশ উপভোগ করছি। তাই খুব সহসাই অর্গল ভাংবো, তা ভেবে বসবেন না যেন! লোকটা এই মুহূর্তে আমার পাশে নেই। থাকলেও যে বিশেষ সুবিধে হতো তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। ব্যবসায়ী লোকদের নিয়ে এই এক সমস্যা। দেখা যাবে যে, নতুন কোনো বিজনেস প্ল্যান মাথায় এসেছে, তা নিয়েই মশগুল। তার বেশিরভাগ উদ্যোগই অবশ্য ফ্লপ খায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বারবার লস খাওয়া, ফ্ল

রুহিন আর আমি

(রুহিন)  আমি তাকিয়ে হাসছি। দেখছি ওদের বোকামি। দেখছি ওদের থতমত মুখ। দেখছি ওদের অপ্রস্তুত ভাবসাব। ওরা ভাবে যে বড় হয়ে গেছে দেখে পৃথিবীর যাবতীয় সমস্যা নিয়ে মুখ বেজার করে থাকা, আর একে অপরের মতামতের বিপক্ষে শাণিত যুক্তি ছুড়ে দিয়ে নাকাল করার ভেতরেই  তাদের যাবতীয় শক্তিমত্তা নিহিত। কী বোকামি! কত আকাশ-পাতাল চিন্তা, কত পাতাল-নরক ভাবনা, কত নরক গুলজার কর্মকান্ড তাদের! কত হিসাব-নিকাশ, কত দলিল-দস্তাবেজ, কত  ঔষধ-পত্তর খরচ করে। ওদের কাছে সেই জাদুর ক্যালকুলেটরটা নেই, যেটা দিয়ে এক নিমিষেই সকল হিসাব কষে ফেলা যায়। ওরা অযথাই আকূল হয়ে কাঁদে, অযথাই ফূর্তির হাসি হাসে, অযথাই লজ্জা পায়, ভয় পায়, কতরকম কায়দা কানুন রে বাবা! আমি ঠিক ঠিক জানি ওরা শেষ পর্যন্ত কী করবে। আমার তাই চিন্তার কিছু নেই। বেশ আছি আরামে আয়েশে। এভাবেই থাকবো। আমি জানি, ওরা আকারে বড়, আর মাঝেমধ্যে বড় অবুঝ চিন্তাভাবনা করে। এসব দেখে আমার বেশ রাগ হয়, আবার হাসিও পায়। বড় হলে অবশ্য এসব আমি বেমালুম ভুলে যাবো। একদমই মনে রাখবো না কিছু। আমি জানি সবকিছু মনে রাখার মত ঝঞ্ঝাট আর কিছুতেই নেই। ওরাও বুঝবে। আরেকটু বড় হলেই বুঝবে। (আমি)  আমার পিঠের ওপর চড়ে বসেছে

হবে না কি আরেকবার?

নির্মলা সেদিন ধর্ষিত হলো। নির্মলা ১২ বছরের একটি মেয়ে, পিউবার্টির গ্রাসে শিশুকাল হারিয়ে ধর্ষণযোগ্য হয়েছিলো  সম্প্রতি। সুযোগসন্ধানী পুরুষ সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাবে এতে অবাক হবার কী আছে? আর সেজন্যেই অনায়াসে বলে ফেলা যায় এই সেদিন নির্মলা ধর্ষিত হলো। এরপর হয়তো বা সে স্নান করলো, পটল আর ঝিঙের ব্যাঞ্জণ রাঁধলো, ঘর মুছলো, কাজের মেয়ে হয়ে জন্মেছে যেহেতু, সামান্য ব্যাপার নিয়ে বেশি হ্যাংলামি করে সবাইকে বিব্রত করাটা কি তার উচিত হবে, আপনারাই বলুন? নির্মলা নামটাও ঝামেলার। একটা সাম্প্রদায়িক উগ্রতা আর সন্দেহের গন্ধ বুনে দিয়ে যায়। তবে নির্মলার ধর্ষণটা তেমন কোনো ঘটনা ছিলো না। এটা অন্য সব সাধারণ ধর্ষণের মতই ছিলো। পুরুষ দেখেছে নারীকে, উত্তেজিত হয়েছে, সুযোগ পেয়ে পৌরুষত্ব দেখিয়েছে। খুবই সিম্পল ব্যাপার। তবে সমস্যা হলো, সবার চিন্তাধারা এক না। হ্যাঁ, ধর্ষণ অবশ্যই একটি অপরাধ, তবে কোন প্রেক্ষিতে, কিসের ইন্ধনে ধর্ষণ করা হয়েছে সেটাও তো বিবেচনায় রাখতে হবে, না কি! সুমনার মধ্যে বিবেচনাবোধ, এবং সহিষ্ণুতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সুমনা হলো নির্মলা যে বাসায় কাজ করে, তার গৃহকর্ত্রী। আধুনিক এবং

ডেমো

প্রথম অধ্যায় (১) নতুন একটা ব্যবসা ধরেছি আমরা। প্রকাশনীর ব্যবসা। আমরা তিনজন। তিন হরিহর আত্মা। আমি ববি, আর আমার অতি ঘনিষ্ঠ দুই স্যাঙাত। আসাদ আর শিমু। গত কয়েকবছর ধরে আমরা সবাই বিভিন্ন মেয়াদে বেকারত্বের কারাগারে বন্দী হয়ে আছি। মধ্যবিত্ত ঘরের চালচুলোহীন আধা বখাটে আধা ভদ্র ছোকড়াদের সাধারণত একটি লাবণ্যময় চেহারার আহলাদী প্রেমিকা থাকে, দুদিন পর পর যে “বাবার শরীরটা ভালো না, বাসা থেকে বিয়ের জন্যে খুব চাপ দিচ্ছে, তুমি কিছু একটা করো” জাতীয় হুমকি দিয়ে বেকার জীবনকে সত্যায়িত করে থাকে। দুর্ভাগ্য না সৌভাগ্য জানি না, আমাদের কারো তেমন কেউ নেই। তবে অন্য অনুষঙ্গটি অবশ্য বেশ ভালোভাবেই বিদ্যমান। তা হলো, টঙ দোকানে চা সিগারেট নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে দুনিয়ার যত্তসব আজাইরা বৃত্তান্ত নিয়ে গুলতানি মারা। তবে  গুলতানি থেকেও মাঝেমধ্যে প্রোডাক্টিভ কিছুর জন্ম হতে পারে। সেদিন বিকেলে আনিসুরের দোকানের আড্ডাটা কেন যেন তেমন জমছিলো না। সবারই মন-মেজাজ খিঁচড়ে ছিলো। আমরা হলাম গিয়ে বলতে পারেন মহামান্য জাতবেকার। তাই চাকুরি-বাকুরি না পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও হতাশা নেই  তেমন একটা। ছোটবেলা থেকেই আমরা যত্তসব অকাজের কাজী। কাজ

জড়জ

(১) ...হঠাৎ করেই তাকে উপলদ্ধি করলাম আমি। এতদিন কোথায় ছিলো, আদৌ ছিলো কি না এসব প্রশ্নে জেরবার হলো আমার বর্তমান অস্তিত্ব। প্রতি পলে তাকে চাইছি, অথচ সে নেই, কোথাও নেই এখন আর। অথচ সে ছিলো, কী ভীষণভাবেই না ছিলো! একটু খানি হেলান, একটু খানি আরাম, কোনরকমে একটা ঋজু কাঁধে আমার ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দেয়া, কী মমতায়ই না সে পালন করে চলতো এসব আবদার! এতদিন সে আমার এমন বায়নাক্কা মিটিয়ে আসছিলো নীরবে। বিনিময়ে কখনই কিছু চায় নি। আর তাই আমি বুঝি নি এই স্বয়ংচল নির্ভরতার বীজটা কত গভীরে প্রোথিত! আজ বারবার আমার পাশে তার ছায়া অস্তিত্ব অনুভব করছি... (২) যেদিনের কথা বলছি, তার আগের রাতটা গেছে বেশ উত্তেজনাময়। মোনালিসা মেসেজ পাঠিয়ে ছিলো আমি যেন তার সাথে দ্রুত দেখা করি সেই তাগিদ জানিয়ে। এক্সাক্ট কথাটা ছিলো "এখুনি দেখা করো"। পাগলী মেয়েটা এমনই অধিকার ফলিয়ে আসে সবসময়! স্মিত হাসিতে তাকে আশকারা জানাই আমি। এমন অসময় বেসময় উদ্ভট সময়েই সে সবসময় তার দাবী জানিয়ে আসে। কখনও ভর দুপুরে, কখনও সাত সকালে, কখনও গভীর রাতে। আমার উচাটন মন বেসামাল হয়ে যায়। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রচুর হরমোন নিঃসৃত হতে থাকে। কখনও আমি আর্দ্র হই সো

ওয়ান ইজ এনাফ

* সে একজন বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মানুষ। তার সমস্যা বা গুণ যাই বলা হোক না কেন তা হলো, কোনকিছু জিজ্ঞেস করলে সে তার জানার সীমা থেকে প্রাসঙ্গিক/অপ্রাসঙ্গিক সবকিছু মিলিয়ে ডিটেইল একটা উত্তর দেবে। আপনি অবশ্য তাকে চিনবেন না মনে হয়। আমাদের এলাকারই অধিবাসী। ছোটখাট দেখতে, ক্রু কাট চুল। গায়ের রঙ বৈশিষ্ট্যহীন। গড়পড়তা বাংলাদেশীদের মত। দুর্জনেরা যাকে বলে ‘কালা কুটকুটা” আর মা-খালারা বলেন “উজ্জ্বল শ্যামলা”। চেনেন না? চিনে যাবেন। এলাকায় নতুন এসেছেন তো, সব কিছু বুঝে নিতে একটু সময় লাগবে। বসেন, চা খান। আরে বসেন! আমিই বিলটা দেবো। ইচ্ছা করলে বাকির খাতায় লিখে রাখতে পারতাম, কিন্তু কাউকে আপ্যায়ন করার জন্যে এটা সঠিক পন্থা না। সে কি রকম ডিটেইল বলে তার একটা উদাহরণ শুনবেন? ধরুন, তাকে জিজ্ঞাসা করলেন ৩১২ নম্বর বাসাটা কোথায়। যদি সে জানে, তাহলে শুধু বাসার ডিরেকশন দিয়ে ক্ষান্ত হবে না। বাসাটা কবে থেকে আছে, কে বানিয়েছে, কারা কারা বসবাস করেছে, ভবন বা অধিবাসী সংক্রান্ত কোন ট্রাজেডি আছে কি না, বাড়ি বানানোর সময়ে কোন অঘটন ঘটেছিলো কি না, মাস্তানরা চাঁদা চেয়েছিলো কি না, ভেজাল ইট অথবা বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছিলো কি না, সব সে বলে দেব

দুটি বনসাই গল্প

(১) "অভিনন্দন, সুখ!" মিলার বয়স সাড়ে পয়ত্রিশ। তাকে একদিন তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী জিজ্ঞেস করলো, "আচ্ছা,তুমি সুখের গোপন রহস্য জানো?"। ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো, যেন কেউ শুনতে না পায়। মিলাও খুব সতর্কতার সাথে শুনে নিলো, যেন কর্ণকুহর থেকে তা সটকে না পড়ে। খুব সাবধানে সঙ্গীর আলিঙ্গন থেকে মুক্ত হয়ে ন্যালাখ্যাপা ন্যাদন্যাদে বাচ্চাটার চিৎকার এড়িয়ে চলে পৌঁছে গেলো ল্যাপটপের কাছে। খোঁজযন্ত্রটিতে সার্চ দিলো, "Secret of happiness". তার কাছে দলে দলে দঙ্গলে দঙ্গলে সুখ চলে আসতে লাগলো। সর্বমোট তিন কোটি সাতানব্বই লক্ষ সার্চ রেজাল্ট পাওয়া গেলো সুখের গোপন রহস্য সংক্রান্ত। মিলা সুখী মনে ডাউনলোড করতে লাগলো কোটি কোটি গোপন সুখের বারতা। খুব সাবধানে, যেন কেউ না জানে! (২)"তোমরা যে বলো দিবস রজনী সভ্যতা সভ্যতা" আমি একজন ক্ষুধার্ত মানুষ। আমি শেষ ভক্ষণ করেছি দুই সেকেন্ড আগে। মেনুতে ছিলো ধূসর রঙের বেড়ালের উরু, এবং লাল পাখনার রাগী মোরগের ঠ্যাং। এসবে কি আর ক্ষুধা মেটে? তাই বেশ কিছু দালান-কোঠা, রাস্তা-ঘাট, লোহা-লক্কড় যোগাড় করছি খাবার জন্যে। ৩ সেকেন্ডের মধ্যেই কোটি খানেক খাবার যোগাড়

একজন ভীষণ লম্বা মানুষ

 (১) সঠিক উত্তরটির পাশে টিক চিহ্ন দিন- মাহমুদ কলি একজন (ক) অভিনেতা (খ) গায়ক (গ) টঙ দোকানদার (ঘ) আদম ব্যাপারী মাহমুদ কলিকে নিয়ে হঠাৎ করেই আমাদের মধ্যে বেশ উৎসাহ সঞ্চারিত হলো। ঘটনা যেদিন ঘটলো তার আগে আমি মাহমুদ কলি নামক কারো কথাই শুনি নি। তাই অফিসের লাঞ্চ ব্রেকের সময়টায় দুই সহকর্মীর সাথে গুলতানি মারতে গিয়ে যখন মাহমুদ কলির প্রসঙ্গ এলো, তখন নিজের জ্ঞান স্বল্পতার হেতু প্রথমে কিছুটা বিব্রত বোধ করলেও পরে "সে একজন মাঝারি মাপের হিট বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা" এ কথা শুনে আমার আফসোস তিরোহিত হলো। বাংলা ছবির অভিনেতাদের সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রেখে কে কবে জাতে উঠতে পেরেছে? প্রসঙ্গটা এলো হঠাৎ করেই। আমরা, মানে আমি জায়েদ আর মাহফুজ লাঞ্চ ব্রেকের মাঝে পিএলএমএস এর বুকলেট নিয়ে 'জরুরী' মিটিং করতে গিয়ে মাঝপথে খেই হারিয়ে বাংলাদেশের কোন অভিনেতা সবচেয়ে লম্বা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সুরাহা করতে মগ্ন হলাম। আমি বললাম, আলমগীর। মাহফুজ বললো ইলিয়াস কাঞ্চন। আর জায়েদ কোত্থেকে যেন কোন সুদূর অতীতের গভীরতম তলদেশ খুড়ে নিয়ে এলো এক অজ্ঞেয় নাম, "মাহমুদ কলি"। এই নাম শুনে আমি আর মাহফুজ মুখ চাওয়া চ

প্রলোভন এবং প্রায়শ্চিত্তের গল্প

পূর্বজন্মের মনোলগ সব সময় এত সাবধান থাকো কেন তুমি? কীসের এত ভয় তোমার? পা ফসকাবার? পা ফসকালে কী হবে? অনেক নিচে নেমে যাবে, অনেক অনেক গভীরে পতিত হবে, এই তো? তারপর কী হবে? কোথায় যাবে? নরকে? নরক কে এত ভয় তোমার? হাহাহা... খরগোশদের আবাসস্থল একটি কামরা। বদ্ধ এবং বিষণ্ণ। কিছু আসবাব। না থাকলেও চলতো। ওক কাঠ দিয়ে বানানো পুরোনো দরোজায় লেপ্টে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক হাহাকার। এখানে থাকে ৩ জন খরগোশ, অথবা ৩ জন মানুষ, অথবা ৩ জন মানবসদৃশ খরগোশ, কিংবা খরগোশ সদৃশ মানুষ। বলা যায় যে কোন একটি। তাতে কেউ বাধা দেবে না, কেউ কিছু মনে করবে না, কারো কিছু এসেও যাবে না। বৃষ্টি ঝরেছে আজ সারা দিন। মুষুলধারে নয়, আবার টিপটিপ ছন্দেও নয়। বৃষ্টি ঝরেছে তার ইচ্ছে মত। কাউকে তোয়াজ করে নয়। কারো মন ভালো করার জন্যে বা কারো মাঝে কাব্যভাব তৈরি করার জন্যে নয়। কাউকে বিষাদী বা স্মৃতিকাতর করার জন্যে নয়। কারো কোথাও যাবার তাড়া নেই, বলা ভালো; কারো কোথাও যাবার ইচ্ছেই নেই। কোথায় যাবে মনুষ্য খরগোশের দল? এই বদ্ধ ঘরের ভেতর যে দরোজাটা আছে তা শাবল দিয়ে আটকানো। শক্তিশালী ইস্পাত। ভারী কাঠ। তাই আর কেউ সেটা ভাঙার চেষ্টা করে নি। কেটলিতে পড়ে আছে এক শত