পাঠকের চোখে "মন্মথের মেলানকোলিয়া"
আমার প্রথম উপন্যাস মন্মথের মেলানকোলিয়া খুব বেশি মানুষ কিনেছে তা নয়, তবে এই বইটি থেকে আমি সর্বোচ্চ সংখ্যক পাঠ প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এখানে সেগুলো গ্রন্থিত করলাম। পাঠকদের প্রতি ভালোবাসা রইলো।
প্রথম পাঠ প্রতিক্রিয়া দেন সহব্লগার জেন রসি, সামহয়্যার ইন ব্লগে।
"বিট্টুকে পড়ার সময় সুনীলের কবিতার বিখ্যাত কিছু লাইন মনে পড়ে যাচ্ছিল। “আমি মানুষের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকি, মানুষের ভেতরের কুকুরটাকে দেখব বলে”। কিন্তু প্রশ্ন হলো বিট্টু কি আসলেই কুকুর নাকি একটা ডিভাইস? যে ডিভাইসকে একদল মানুষের মাঝে ফেলে দিয়ে মূলত মানুষকেই ব্যাখা করার চেষ্টা করা হয়। এই ব্যাখ্যার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এবং এই সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে লেখকের পক্ষপাতিত্ব আছে। অবসেশনও হতে পারে।"
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে পাঠ প্রতিক্রিয়া অথবা পাঠ প্রতিক্রিয়া নাঃ মন্মথের মেলানকোলিয়া
দ্বিতীয় পাঠ প্রতিক্রিয়া পাই সহব্লগার এবং সহকর্মী তাশমিন নূরের কাছ থেকে। তিনি চিঠির আঙ্গিকে লেখাটি প্রকাশ করেন সামহয়্যার ইন ব্লগে।
"পুরো উপন্যাসটা আপনি লিখেছেন আপনার ছোট গল্পের ঢঙে। কথোপকথন কম এবং অনেক বেশি বর্ণনামূলক। এটা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। তবে, ছোট পরিসরের উপন্যাসের ক্ষেত্রে এই স্টাইল উপভোগ্য হলেও, বড় পরিসরে এটা হয়ত ক্লান্তিকর লাগত। চরিত্র চিত্রন নিয়ে দুটো কথা বলি। মনে হলো, এই উপন্যাসে আপনার মনোযোগের সর্বোচ্চটা আপনি ব্যয় করেছেন বিট্টুর পেছনে। ওকে অনেক যত্ন করে তৈরি করেছেন আপনি। কুকুরদের জীবনাচরণ নিয়ে স্টাডি করেছেন বোঝাই যায়। সেই হিসেবে কাজলীকে একটু মলিন লেগেছে। উপন্যাসে মানুষ এবং মহাশক্তির যে সম্মেলন সেটা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। সেখানে আপনি আপনার ব্যক্তিগত দর্শন প্রয়োগ করেছেন হয়তো। স্রষ্টাকে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সাহায্য নিতে হয় তার সৃষ্টিরই। সেই সম্মেলনে দেবতা আর তার সৃষ্টিকুল মিলে নির্ধারণ করে কাজলীর ভবিষ্যত। গদ্যকার হাসান মাহবুবের পাশে কবি হাসান মাহবুব যথেষ্ট পরিমাণেই উপস্থিত এখানে।"
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে-
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ হাসান মাহবুব-এর 'মন্মথের মেলানকোলিয়া'
চিঠির আকারে আরো একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখে অনুজপ্রতিম ব্লগার হাতুড়ে লেখক ওরফে আরিয়ান রিয়াদ। এটাও সামহয়্যার ইন ব্লগে প্রকাশ পায়।
"প্রিয় হাসান ভাই,
ভেবেছিলাম মন্মথের মেলানকোলিয়া পড়বো না! কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জানিনা। হয়ত ফ্ল্যাপের কথাটা তেমন টানেনি অথবা আমার অবচেতন আপনাকে একজন গল্পকার হিসেবেই দেখতে চেয়েছিল আজীবন! কিন্তু জেন রসি ভাইয়ের রিভিউ পড়ে মনে হলো এটা এক্ষুণি পড়া উচিত। না হলে নরক নিশ্চিত!যেহেতু নরকেই বসবাস তাই দ্বিতীয়বার যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার কোন মানেই নেই..."
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে চিঠিক্রিয়া: মন্মথের মেলানকোলিয়া
ব্লগার করুণাধারার সাথে ব্লগে আমার মিথস্ক্রিয়া তেমন ছিলো না। তারপরেও তিনি বইটি পড়েছেন, এবং প্রতিক্রিয়া লিখেছেন, এটা আমাকে সারপ্রাইজড করেছে খুব!
"এবার বলি আমার কেমন লাগলো মন্মথের মেলানকোলিয়া। গল্প বলার ভাষা ও ভঙ্গিমা চমৎকার। আমি এমন পাঠক যে গল্পে চেনাজানা মানুষের ছায়া দেখতে পেলে সেই গল্প তরতর করে পড়ে ফেলতে পারি। কিন্তু এই গল্প পড়তে আমার দীর্ঘ সময় লেগেছে; প্রথমত কাজলীকে বুঝতে গিয়ে- কাজলী আমার চেনাজানা চরিত্রের মধ্যে পড়ে নাই। দ্বিতীয়তঃ অনেক কিছুই পড়তে ভালো লাগেনি, তাই। যেমন কাজলী বসে মানুষের গলা কাটা ভিডিও দেখছে! অবশ্য গলাকাটার কোন রগরগে বর্ণনা গল্পে দেয়া হয়নি। বেশ কয়েকদিন লাগিয়ে বইটা শেষ করার পর মনে হল- না পড়লে জানতেই পারতাম না একজন মানুষ কতটা কষ্টের ভিতর ডুবে যেতে যেতে প্রাণপণ চেষ্টা করে ভেসে উঠতে!! মনে পড়ে গেল কয়েক বছর আগে পত্রিকায় আসা রীতা মিতার কাহিনী। আমাদের আশেপাশে মনের অসুখে ভোগা এমন অনেক মানুষ আছেন তাদের আমরা জানতে পারিনা। এই গল্প পড়লে সেই জানার কাজটি সহজ হয়ে যায়।"
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে- কেমন লাগলো: মন্মথের মেলানকোলিয়া
ব্লগার ক্লে ডলের সাথে শুধু ব্লগেই কথা হয়েছে, তাকে আমি বাস্তবে দেখি নি, জানি না তিনি আসলে কে, তাতে কী! তিনি আমার পাঠক, এটাই বড় পরিচয়। সামহয়্যারে তিনিও একটি পাঠ প্রতিক্রিয়া লেখেন।
"ভিতরে ভিতরে সবাই যেমন একা, আবার ঘূর্ণায়মান এ পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে,উজ্জ্বল করতে সবাই ভীষণ ব্যস্ত। কারো জন্য কারো সময় নেই, এমনকি নিজের জন্য নিজেরও সময় নেই। নিজের জন্য একটু সময় বের করতে কাজলীর অভিনব বিজ্ঞাপনই প্রামাণ করে মানুষের মন, মনে মনে কতখানি ক্লান্ত এখন। মানুষের পাশবিকতার কাছে পশুও কতখানি অসহায় বিট্টু জানে।মন্মথের মেলানকোলিয়া অর্থাৎ কামদেবের বিষাদে এসবকিছু মিলেমিশে একাকার। এবং গভীর থেকে গভীরতর কিছু। যার তল খুঁজতে ভাবতে হয়। শুধু ভেবেই যেতে হয়…"
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে- বই নিয়ে বকর বকর - মন্মথের মেলানকোলিয়া
খুব প্রিয় একজন মানুষ মাহরীন ফেরদৌস (আমার কাছে যে কেকশেক আপু) ফেসবুকেই লিখে ফেললো চিঠির আঙ্গিকে।
"আপনার কোন এক সাক্ষাৎকারে পড়েছিলাম উপন্যাসের নাম দিতে চেয়েছিলেন ‘ঝিনুকতারা’, তারপর অনেকের নেতিবাচক ভোট পেয়ে সেই নামটি বাদ দিয়েছিলেন। কেন জানি না আপনার উপন্যাস শেষ করে মনে হয়েছে ‘ঝিনুকতারা’ নামটি বেশ সুন্দর। এই নামটি রাখলে মন্দ হতো না। মানুষের মত বইয়ের কী কোন ডাকনাম রাখা যায়? রাখা গেলে এই নামটি রাখবেন প্লিজ। ভিক্টর হুগো বলেছিলেন, “Melancholy is the happiness of being sad.” আপনার ভিন্নধর্মী লেখা সেই বেদনাতুর সুখের কাছে পাঠকদের নিয়ে যাক বার বার এই শুভকামনা রইল। আর ‘মন্মথের মেলানকোলিয়া’ তার দীর্ঘ বিষাদের ছাপ পাঠকমনে ছড়িয়ে দিক..."
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে
সর্বশেষ লিখেছেন সহব্লগার এবং লেখক সাদিয়া সুলতানা।
"একটা আলো ঝলমলে রঙিন শহরের বাতাসে বিষাদগ্রস্ততার কতই না গল্প লুকিয়ে থাকে! আর একজন প্রখর অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ মুক্তো খোঁজার মতোন খুঁজে এনে সেই গল্পগুলোকে শব্দের ঘেরাটোপে বন্দী করে আর লেখকের আঙুলের স্পর্শে বিষণ্নতার সেই গল্পই পাঠকের কাছে পরম আদৃত হয়ে ওঠে। তেমনই এক ঘনঘোর বিষাদ আর বিভ্রমের গল্প কথাসাহিত্যিক হাসান মাহবুবের প্রথম উপন্যাস ‘মন্মথের মেলানকোলিয়া।’"
পুরোটা পড়ুন এখান থেকে ‘মন্মথের মেলানকোলিয়া’-এক অবিনাশী বিষাদ আখ্যান
যারা মন্মথের মেলানকোলিয়া সংগ্রহ করতে চান, তারা ঢু মারুন রকমারি ডট কমের এই লিংকে
এই নভেম্বরেই হয়তো আমার দ্বিতীয় উপন্যাস "ছহি রকেট সায়েন্স শিক্ষা" চলে আসবে। খুব উৎকন্ঠায় আছি আপনাদের কেমন লাগবে জানার জন্যে!
আমার অন্যান্য বই-
প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত (গল্পগ্রন্থ, প্রকাশকাল ২০১২)
আনন্দভ্রম (গল্পগ্রন্থ, প্রকাশকাল ২০১৬)
নরকের রাজপুত্র (গল্পগ্রন্থ, প্রকাশকাল ২০১৭)
Comments
Post a Comment