একজন ম্যাজিসিয়ান

*
লোকটা ভেবেছিলো, চাইলেই সে তার সন্তানদের খুশি করতে পারে। এমন অদ্ভুত ভাবনা কী করে তার মাথায় এলো বলা কঠিন। স্বল্প রোজগারের চাকুরি আর হাড়ভাঙা খাটুনি, সাথে বিনা বেতনের ওভার টাইম, এমন অবস্থায় একজন লোক কী করে এমন ভাবতে পারে? তবে তারপরেও সে ঘরে ফিরে বাচ্চাদের সময় দিতো। ঘোড়া হতো, গরু হতো, মাছ হতো, পাখি হতো, ভূত হতো!
এভাবে চলছিলো বেশ। বিপত্তি বাধলো একদিন শখ করে দোকান থেকে এক পাতা সিভিট কেনার পর থেকে। চকলেট, বার্গার অথবা মাংস খাবার সুযোগ সুযোগ তো তেমন হয় না তার সন্তানদের। তাই সেই গোলাকৃতির শুষ্ক ট্যাবলেটেই অমৃত খুঁজে পেলো অপুষ্ট শরীরের শিশুদ্বয়।
লোকটা ভাবতেও পারে নি ক্ষণিকের আবেগে নেয়া সেই অপচয়কারী সিদ্ধান্তটি তার এতটা আর্থিক ক্ষতি করবে। প্রতি দিন দুজনকে একটি করে সিভিট না দিলে তারা শুরু করে কান্নাকাটি,ঝগড়াঝাটি, অশান্তি। কী করা যায়, কী করা যায়?
লোকটা ভাবলো। অনেক ভাবলো। একসময় সে চমৎকার একটা সিদ্ধান্ত নিলো। সে জাদু দেখাবে তার সন্তানদের।
*
-বাবা’রা, চোখ বন্ধ করো তো! তোমাদের এখন কী দিবো বলো তো?
-কী বাবা?
-সিভিট!
-ইয়েয়ে!
লোকটা মানিব্যাগ থেকে একটি সিভিট বের করলো। মোড়ক থেকে খুলে নিয়ে ভেঙে দু ভাগ করলো। বাচ্চাদের মুখে পুরে দিলো একটি সিভিটের দুটি খন্ডাংশ।
খরচ কমে অর্ধেক হলো, বাচ্চারাও খুশি। বাচ্চাদের হাসি দেখে ম্যাজিসিয়ান তৃপ্ত মনে একটি দীর্ঘশ্বাস গোপন করলো। 

Comments

Popular posts from this blog

প্যাথেটিক হোমিওপ্যাথি, কেন বিশ্বাস রাখছেন!

মুভি রিভিউ 'মাদার' এ্যারোনোফস্কির মেইনস্ট্রিম ওয়ান্ডার!

জ্বী না, সিয়েরালিওনের দ্বিতীয় ভাষা বাংলা নয়!