ডার্ক ওয়েব, ডিপ ওয়েব, মারিয়ানাস ওয়েব, মিথ বনাম বাস্তবতা
আমি ডার্ক ওয়েবে এক সময়
মাসের পর মাসে পড়ে থেকেছি”, আমার এক প্রবাসী ছোট ভাই একদিন কথা প্রসঙ্গে জানালো।
আমি তখন ডার্ক ওয়েব নিয়ে অল্পবিস্তর পড়াশোনা করছি। নানারকম গা ছমছমে গল্প পড়ি, কিন্তু
ঢোকার সাহস পাই না। কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করি,
কেন সে ওখানে অত সময় কাটাতো। সে বড়
অদ্ভুত এক উত্তর দিলো। তার স্বপ্ন হচ্ছে সর্বোচ্চ লেভেলের হাইটেক অনলাইন
সিকিউরিটিতে কাজ করা। সেসব কাজ করতে হলে ওকে এমন সব কিছুর এক্সেস পেতে হবে, যা
সাধারণ মানুষের পক্ষে হজম করা সম্ভব নয়। আর এসব অভিজ্ঞতা নিতে হলে ডার্ক ওয়েবের
চেয়ে ‘ভালো’ কিছু আর কী হতে পারে?
খুব সংক্ষেপে বলে নেই ডার্ক
ওয়েব কী। ডার্ক ওয়েব হলো ইন্টারনেটের এমন একটি অংশ, যেখানে সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন
অথবা ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করা যায় না। এর জন্যে লাগে বিশেষ ব্রাউজার এবং সার্চ
ইঞ্জিন। যেমন টর এবং অনিয়ন।
কী থাকে ডার্ক ওয়েবে?
প্রশ্নটা বরং এমন হওয়া উচিত, কী থাকে না ডার্ক ওয়েবে! জাল পাসপোর্ট চান? পেয়ে যাবেন। পেশাদার খুনী চান? পেয়ে যাবেন। পাইরেটেড বই, সিডি লাগবে? কোনো ব্যাপারই না! আর দুর্ধর্ষ সব হ্যাকিং টুল তো খুবই সহজলভ্য! যেকোন ধরণের ড্রাগস, চলবে? আছে! খুন, টর্চার, রেপ, এনিমেল কিলিং, জ্বী সবই আছে তাতে।
এসব তো ছেলেখেলা। আরো গভীরে ঢোকা যাক। রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক, অস্ত্র বেচাকেনা, এসবও কিন্তু ডার্ক ওয়েবে আছে। তবে সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন বা ব্রাউজার এসবের হদিস পায় না। কথিত আছে যে ডার্ক ওয়েবে ঘুরলেই নিজের সব তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যায়, সব ফাঁস হয়ে যায়। এটা ভুল। তবে হ্যাঁ, গোয়েন্দারা ওৎ পেতে থাকে অপরাধীদের ধরার জন্যে। এই তো কিছুদিন আগেই ডার্ক ওয়েবের কুখ্যাত চোরাই বাজার সিল্ক রুট বন্ধ হয়ে গেলো। তবে আপনার আমার মত চুনোপুঁটির দিকে তাদের খুব একটু নজর দেয়ার সময় নেই। কারণ ডার্ক ওয়েবে আইপি ট্রেস করা আসলেই ঝামেলা।
এ পর্যন্ত পড়ে হয়তো আপনি খুব এক্সাইটেড হয়ে গেছেন। ভাবছেন, যাই ঢুকে দেখি ব্যাপারটা কী! চলেন তাহলে!
তো কীভাবে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করা যাবে?
প্রথমে ডাউনলোড করে নিন টর ব্রাউজার
মোবাইলের জন্যে নামিয়ে নিতে হবে অরবট
নেন, এখন ব্রাউজিং করেন।
ডার্ক ওয়েব অনেক স্লো একটি
নেটওয়ার্ক। এখানে একটি সাধারণ মানের ভিডিও বাফার হতেও অনেক সময় লেগে যায় মাঝে
মধ্যে। আর নিষিদ্ধ জিনিসের সমাহার আছে বলেই যে তা একদম তাকে সাজিয়ে রাখা আছে
এমনটাও না ব্যাপারটা। ডার্ক ওয়েব নিয়ে প্রচলিত আছে নানারকম মিথ। এগুলোর কিছু সত্য, কিছু
অর্ধ সত্য, কিছু মিথ্যা। এগুলো নিয়ে ব্লগে, ফোরামে
নানারকম আলোচনা চলে, কিন্তু সত্যিকারের সত্যিটা কিছুটা অস্পষ্টই এখনও।
আসুন জেনে নেই এমন কিছু
মিথের কথা।
রেড রুম–
রেড রুম হলো ডার্ক ওয়েবের
কিছু গোপন আস্তানা। এখানে মানুষকে টর্চার,
খুন, রেপ ইত্যাদির লাইভ স্ট্রিমিং
হয়। কাউকে কাউকে ধরে আনা হয়, এবং কেউ কেউ নিজের ইচ্ছায় নিজেকে রেড রুমে সঁপে দেয়
অতিশয় দারিদ্রের কারণে, পরিবারকে বাঁচাতে। এসব লাইভ স্ট্রিমিং নাকি মানুষ
পয়সা দিয়ে দেখে। এ নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক আছে। কিন্তু এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর যিনি
নিজের চোখে এসব দেখেছেন। সবাই অমুক তমুকের বরাত দিয়ে বলে। আর ডার্ক ওয়েব
নেটওয়ার্কের যে গতি, তাতে রেডরুম চালানো অবাস্তব কল্পনা বলেই মনে হয়।
আমার মতামত- রেডরুম বলে কিছু নাই। কোনো ভেরিফায়েড সোর্স থেকে জানতে পারি নাই এর সত্যতা।
মারিয়ানাস ওয়েব–
কথিত আছে মারিয়ানা ওয়েব
হচ্ছে ডার্ক ওয়েবের গভীরতম জায়গা। সেখানে অতিশয় এক্সপার্ট হ্যাকাররা ছাড়া কেউ যেতে
পারে না। খুব কম লোকই এর সন্ধান জানে,
ইত্যাদি। এই মারিয়ানাস ওয়েব নাকি
ইলুমিনাতিদের দ্বারা প্রচলিত, এখানে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গোপন সত্যগুলি লিপিবদ্ধ
আছে, এটি নিউরাল নেটওয়ার্ক দ্বারা তৈরি, ইত্যাদি।
এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এই পোস্টের শেষে করছি
বিশালত্ব-
বলা হয়ে থাকে, আমরা
সাধারণভাবে যে ওয়েব দেখি, তা ইন্টারনেটের মোট আকারের মাত্র দশ শতাংশ, বাকিটুকু
হলো ডার্ক ওয়েব। এটা একদমই ভুল কথা। ডার্ক ওয়েব আদতে ইন্টারনেটের ক্ষুদ্র একটি
অংশ।
তবে এ কথা ঠিক, যে আমরা যে সার্চ রেজাল্টগুলো গুগলের মাধ্যমে পাই, সেটা আসলেই ইন্টারনেট রিসোর্সের খুবই সামান্য অংশ। গুগলের সাধ্য নাই বাকি ৯০% এ ঢোকা। কী, গোলমেলে লাগছে? এই বললাম ডার্ক ওয়েব খুবই ক্ষুদ্র অংশ, আবার বলছি গুগল ৯০% জায়গাই খুঁজে পায় না, ব্যাপারটা কী!
ব্যাপারটা বেশ ডিপ। আসুন তাহলে জানি ডিপ ওয়েব সম্পর্কে। এই যে আপনার জিমেইলে রক্ষিত ফাইল, ফেসবুকের প্রাইভেসি পাবলিক না করা পোস্ট, ইনবক্সের কনভার্সেশন, গুগল ড্রাইভের প্রাইভেসি রেস্ট্রিক্টেড করা ফাইল, এসবই ডিপ ওয়েব। এখন কি আপনি আপনার মেইল একাউন্টে লগড ইন হয়ে আছেন? জ্বী, ওটাই ডিপ ওয়েব। ডিপ ওয়েবের কাহিনী শেষ।
ডার্ক ওয়েব
মানেই নৃশংস খুনী, বর্বর ক্রিমিনাল আর ড্রাগসের আস্তানা নয়। এখানে আপনি
রেডিও শুনতে পারেন, ফ্যাশন ট্রেন্ড নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, আর
সবচেয়ে বড় কথা হলো, আপনি টর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সবখানেই ঢুকতে পারবেন।
ফেসবুক থেকে ইউটিউব সব!
এবার আসা যাক মারিয়ানাস ওয়েব বিষয়ে।
কদিন আগে বাংলা ভাষার প্রথম এবং সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি বিষয়ক
সাইট টেকটিউনসে মারিয়ানা’স ওয়েব বিষয়ক একটা পোস্ট দেখলাম। সেটাকে তারা আবার
এখনও নির্বাচিত পোস্ট হিসেবে ঝুলিয়ে রেখেছে। সেই পোস্টের বক্তব্য কী? ইন্টারনেটে
নাকি মারিয়ানা’স ওয়েব নামক এক জায়গা রয়েছে, সেটা
সবচেয়ে দুর্ভেদ্য এবং দুর্গম অঞ্চল। এটার নামকরণ করা হয়েছে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে, যা
হলো প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে গভীর স্থান। খুব ভালো কথা। তা এই মারিয়ানা’স ওয়েব
জিনিসটা কী? আসুন লেখকের ভাষ্যেই শুনি।
“এটা মানা হয় যে;
সরকার এর যতসব টপ সিক্রেট তথ্যগুলো
আছে তা এখানে পাওয়া যায়। দুনিয়ায় সবচেয়ে রহস্যময় আর গোপনীয় জিনিস যদি থাকে সেসব
এখানে দেখা যায়। আরও বলা হয় যে;
“এটলান্টিস” সমুদ্রের
নিচে এক কাল্পনিক দ্বীপ যেটি আছে;
তার তথ্যও এই মারিয়ানা’স ওয়েবে
আছে। আরও বলা হয় যে; ইলুমিনাটি বা ইলুমিনাটিদের লোকদের [শয়তানের পূজারী]
সাথে যোগাযোগ; এর ব্যবস্হা এই মারিয়ানা’স ওয়েবে
আছে। তাই এই মারিয়ানা’স ওয়েব হল ইন্টারনেটের সবচেয়ে রহস্যময় ও গোপনীয়
জায়গা। এর চাইতে রহস্যময় ও গোপনীয় ওয়েব আর নেই”।
“মানা হয় যে”,
“বলা হয় যে” ইত্যাদি
ধারণার ওপর ভর করে তিনি আস্ত একটা প্রবন্ধ ফেঁদে বসলেন, তা
আবার সাইটে স্টিকিও করা হলো!
আচ্ছা, ধরে
নিলাম মারিয়ানা’স ওয়েব আছে। কিন্তু এত গহীন গোপন এলাকার কথা লেখক
জানলেন কীভাবে? তার কাছে কারা খবর পৌঁছে দিলো? তিনি
নাকি জেনেছেন রেডিটে কোনো এক হ্যাকারকে কেউ কোনো একটা কাজের জন্যে
অতি উচ্চ মূল্য দিয়ে হায়ার করে। সেই হ্যাকারের সন্দেহ হয়, এত
টাকা কেন সাঁধছে? নিশ্চয়ই কোনো কিন্তু আছে এতে! হ্যাঁ, তার
ধারণা ‘ঠিক’ ছিলো বটে! সাধারণ ওয়েবসাইট বানানোর নাম করে তাকে
প্রাইভেট সার্ভারে ওয়েবসাইট ডিজাইন করিয়ে নেয়া হলো। তা সেই হ্যাকার ভদ্রলোকের আবার
কিছু গোপন জায়গার এক্সেস ছিলো। সে ঐ জায়গাগুলোতে গিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ দেখে ভরকে
যায়। সেখানে হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট আরো কী কী সব যা তা নিয়ে কাজ করা হয়। তারপর সে
সেটা ডাউনলোড করে ইউটিউবে আপলোড করে দিলো। ব্যাস সেই ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে আমরা
পেয়ে গেলাম মারিয়ানা’স ওয়েব নামক অতি গোপন, অতি রহস্যময়, অতি
দুর্ভেদ্য জায়গার খোঁজ একদম নগদে। কী তামশা,
সব ফকফকা, তাই
না?
ব্যাপারটা কেমন না! পৃথিবীর
সবচেয়ে দুর্গম ইন্টারনেট অঞ্চলের অধিবাসীরা ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্যে হ্যাকার ভাড়া
করছেন অতি উচ্চ মূল্য দিয়ে, সেই হ্যাকার আবার কিছু জায়গার এক্সেস পাচ্ছে, সেই
জায়গায় গিয়ে ভিডিও দেখে তা ডাউনলোড করে আবার ইউটিউবে আপলোড করে দিচ্ছে, তা
আবার আমাদের বাংলা ওয়েবসাইটেও এসে যাচ্ছে চটপট!
আর্টিকেলের শেষে বলা হয়েছে
মারিয়ানা’স ওয়েবে ঢুকতে না কি কোয়ান্টাম কম্পিউটার লাগে। সেই কোয়ান্টাম
কম্পিউটার না কি সুপার কম্পিউটারের চেয়ে হাজারগুণ বেশি শক্তিশালী। মাত্র ৪টি
কোয়ান্টাম কম্পিউটার দিয়ে নাকি সম্পূর্ণ আমেরিকার কম্পিউটারের সকল কাজ কাভার করা
সম্ভব।
আচ্ছা তাহলে এখন চিন্তা করে
দেখুন গল্পটা কেমন দাঁড়াচ্ছে, কথিত হ্যাকার সাধারণ কম্পিউটার দিয়েই কোয়ান্টাম
কম্পিউটার দিয়ে পরিচালিত দুর্ভেদ্য মারিয়ানা’স ওয়েবে ঢুকে একটু পর আবার বের হয়ে এসেছেন, সাথে
১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটি ডাউনলোডকৃত ভিডিও ক্লিপ। সারফেস ওয়েবেই আমাদের ইউটিউব
থেকে ভিডিও ডাউনলোড করতে থার্ড পার্টি সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয়, আর
ইনি মারিয়ানাস ওয়েব থেকে কত সুন্দর করে ভিডিও ডাউনলোড করে ফেললেন!
খুব বেশি রিসার্চ করা লাগে
না, কমনসেন্স থেকেও অনেক কিছু বোঝা যায়। সেটাও আমরা খাটাতে রাজী না।
শুধু টেকটিউনস না, বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিষয়ক সব সাইটেই মারিয়ানা’স ওয়েব
সংক্রান্ত এই একটিই লেখা আছে, এবং তা মানুষজন ধুমিয়ে শেয়ার করে যাচ্ছে। আর সবাই কপি
করেছে ভারতীয় একজন ইউটিউবারের ভিডিও থেকে,
সে আবার কপি করেছে ইংরেজি ভিডিও
থেকে।
পোস্টের শেষে আমাদের বিশিষ্ট
টেকি ভাইরা লেখককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন,
নতুন কিছু জানতে পেরে কৃতার্থ বোধ
করেছেন। আশা করি আর কিছুদিনের মধ্যে তারা মারিয়ানা’স ওয়েব সংক্রান্ত আরো প্রচুর
তথ্য-উপাত্ত, ছবি,
ভিডিও যোগাড় করে ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
কেউ আমিন না বলে যাবেন না!
ডার্ক ওয়েবের অনেক মিথ সম্পর্কে বললাম, তবে এটাও ঠিক, ডার্ক ওয়েবে আসলেই এমন ভয়ংকর কিছু ফোরাম আছে, এমন ভয়াবহ কনটেন্ট আছে, যা বিকৃতির চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো চাইল্ড মলেস্টিং ভিডিও ডেইজিস ডেস্ট্রাকশন।
এই ভিডিওর নির্মাতা একজন
অস্ট্রেলিয়ান পিশাচ তার নাম পিটার স্কালি।
ভিডিওটি বানানো হয় ফিলিপাইনে, সহায়তা
করে তার ফিলিপানিজ বান্ধবী, যে নিজেই একজন নাবালিকা দেহপসারিনী ছিলো। ডেইজিস
ডেস্ট্রাকশনে কোনো শিশুকে মেরে ফেলা হয়নি,
ধর্ষণও করা হয়নি। তারপরেও কেন এটি
এত কুখ্যাত? কারণ এটি তৈরি হয়েছিলো মানুষের মনোরঞ্জনের জন্যে। এই
অতি অমানবিক ভিডিওটি প্রচারের আগে ট্রেইলার বানানো হয়েছিলো- আসিতেছে! এটি চাইলেই
যে কেউ দেখতে পারতো না। টাকা দিয়ে দেখতে হতো। টাকার অংকটাও কম না। হাজার ডলারের
চেয়েও বেশি। ভাবতে পারেন?
পিটার স্কালি
ধরা পড়ে এখন জেলে বন্দী আছে। ফিলিপাইনের আইনে মৃত্যুদণ্ড নেই। কিন্তু শুধু এই
নরকের কীটের জন্যে আইনে সংশোধনী আনার প্রচেষ্টা করা হয়েছিলো। বেশি কিছু লিখলাম না, অসুস্থ
বোধ করছি। তবে স্বস্তির বিষয় হলো,
আপনি ডেইজিস ডেস্ট্রাকশনের লিংক
কখনই খুঁজে পাবেন না। খামোখা সময় নষ্ট হবে। তবে যদি কখনও খুঁজে পান, দয়া
করে দেখবেন না। কারণ বাকি জীবনটা তাহলে মানসিক সমস্যায় পর্যুদস্ত হয়ে কাটাতে হতে
পারে। এটা মোটেও অতিকথন না। এরকম ঘটেছে বেশ কয়েকজনের জীবনে। ভালো কথা, আমি
ডেইজিস ডেস্ট্রাকশন দেখা তো দূরের কথা,
আমি ডার্ক ওয়েবেই ঢুকিনি কখনও!
স্বস্তির কথা হলো, ডেইজি
এখন যথাযথ আশ্রয়ে আছে, ভালো আছে। ভালো আছে অন্য দুটি মেয়েও। প্রার্থনা তাদের
মঙ্গলের জন্যে, অভিশাপ ঘৃণ্যতম জীব পিটার স্কালির জন্যে।
এখন সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে আমাদের এমন সবকিছু দেখতে, শুনতে হচ্ছে, যেগুলোর কোনোটাই ডার্ক ওয়েবের চেয়ে কম না। কে জানে কবে কোন ভয়ংকরের মুখোমুখি হতে হয়!
আরো পড়ুন ঝিমঝিমপুর হুংকারবাদ
পড়তে পড়তে মনে হল লেখক সাহেব নিজেও কনফিউজড, কিছু ব্যাপার সত্য বলবেন নাকি মিথ ধরে নিবেন ।
ReplyDeleteযাইহোক। নিচের কথাগুলা যেসকল জায়গায় পেয়েছেন সবি বোগাস। খুবি হাস্যকর।
"কোন এক হ্যাকারকে কেউ কোনো একটা কাজের জন্যে অতি উচ্চ মূল্য দিয়ে হায়ার করে। সেই হ্যাকারের সন্দেহ হয়, এত টাকা কেন সাঁধছে? নিশ্চয়ই কোনো কিন্তু আছে এতে! হ্যাঁ, তার ধারণা ‘ঠিক’ ছিলো বটে! সাধারণ ওয়েবসাইট বানানোর নাম করে তাকে প্রাইভেট সার্ভারে ওয়েবসাইট ডিজাইন করিয়ে নেয়া হলো। তা সেই হ্যাকার ভদ্রলোকের আবার কিছু গোপন জায়গার এক্সেস ছিলো। সে ঐ জায়গাগুলোতে গিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ দেখে ভরকে যায়। সেখানে হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট আরো কী কী সব যা তা নিয়ে কাজ করা হয়। তারপর সে সেটা ডাউনলোড করে ইউটিউবে আপলোড করে দিলো। "
হাস্যকর কারণ ওয়েবসাইট বানানোর জন্যে ডার্কওয়েবে ঢুক লাগেনা। লোকালহোস্টে বানিয়ে ক্লায়েন্ট কে দিয়ে দিলে সে ডার্কোয়েবে হোস্ট করে নিবে। মামলা শেষ।তারউপর ডার্কওয়েবের হোস্টিং মানে নিজস্ব সার্ভার। কপি পেস্ট করে ফাইল রাখবে শুধু।
পিটার স্কালির যেই ভিডিও লিঙ্ক দিলেন সেটা এমনিতেই ভয়ংকরতা বুঝাতে বানানো। চাইল্ড পর্নের জন্যে ডার্ক ছাড়া আর রাস্তা নেই। অন্যদিকে টর্চার ভিডিও। পিটার এসব করত বলে তার নামে যেকোনো ভয়ংকর ভিডিও ছেড়ে দেওয়া যায়। যদিও এই ভিডিওতে ভয়ংকর কিছু পাইনাই হরর ছাড়া। হরর মানে কমেডি।
তবে সাধারন ইউজারদের জন্যে ভাল লিখেছেন। টেকি পার্সন আরো অনেক কিছু চাইবে। ডার্ক ওয়েবের উৎপত্তি থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর জন্ম পর্যন্ত থাকলে ভাল হত। জন্মের যোগসুত্রটা ধরতে পারত সবাই।
আমি কনফিউজড না। আমার মতামতে কনফিডেন্স ছিলো। আমি রেড রুমের সত্যতা পাই নাই। আর মারিয়ানাস ওয়েব তো পুরাই ভুয়া। পিটার স্কালির ভিডিও লিংক তো দেই নাই। কই পাইলেন? আমি মারিয়ানা ওয়েব নিয়া টেকটিউনসের লেখাটায় যে ভিডিওটার লিংক দেয়া হইছিলো সেইটা দিছি। আপনি পিটার স্কালির সাথে গুলায়া ফেলছেন। ব্যাপার না। পিটার স্কালির ভিডিওটা খুবই কুখ্যাত। এটা নিয়ে প্রচুর আলোড়ন তৈরি হইছিলো। পুরা বিষয়টা এত ভয়াবহ, যে আমি বিস্তারিত কিছু বলতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করি নাই। ওয়েবসাইট বানানোর কথাটায় টেকনিক্যাল ভুল আছে। ঠিক করে নিবো।
Deleteধন্যবাদ।