উপন্যাস- ছহি রকেট সায়েন্স শিক্ষা (প্রথম অধ্যায়)



সূচনা

একটা পোকার কথা আমার খুব মনে পড়ে আমার জীবনের প্রথম উল্লেখযোগ্য ঘটনার নেপথ্যে আছে সে  তার নামটি বেশ জবরদস্ত। ঢোলকলমি পোকা। সে সময় আমাদের জনপদে বেশ  আলোড়ন তৈরি  করতে সক্ষম হয়েছিলো এই ক্ষুদ্র সৃষ্টিআলোড়নের বদলে আতঙ্ক বললেই মানানসই হবে। অতটুকু পোকার কী  ক্ষমতা! তারা এতটাই বিষাক্ত ছিলো, যে দূর থেকেই মানুষজনকে আক্রান্ত করতে পারতো। মানুষজন তাদের দেখে দমবন্ধ হয়ে মারা যেতো, অথবা তাদের গলা থেকে রক্ত ছলকে পড়তো।  কোনো ডাক্তারের সাধ্য ছিলো না এর প্রতিকার করার। এমন একটি রোমাঞ্চকর বিষয়ে যে কেউ শিহরিত হবে স্বাভাবিকভাবেই। আমিও হয়েছিলাম। নিজেকে নিরাপদে রেখে দূর থেকে ভয়ংকর সব বিপদের বর্ণনা পড়ার মত আয়েশ আর কোথায় পাবো! কীভাবে ঢোল কলমি পোকা এলো, তাদের উদ্দেশ্য কী, কীভাবে তারা মানবজাতিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে এনিয়ে জ্ঞানী মুরুব্বিরা নানারকম গা ছমছমে গল্প বলতেন এর আগে ভয় পাইয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে যেসব গল্প রচিত হয়েছিলো, সেগুলোতে যথেষ্ট সৃষ্টিশীলতার পরিচয় তারা দিতে পারেন নি দিনের পর দিন আমাদের শোনানো হত জ্বিন এসে ময়রার দোকান থেকে মিষ্টি খেয়ে যাচ্ছে, অথবা মেছো ভূত এসে নাকিসুরে ইলিশ মাছের জন্যে কান্নাকাটি করছে। এসব গল্প আসর জমানোর জন্যে খারাপ না, তবে গা ছমছমে পরিস্থিতি তৈরি করতে আমাদের দরকার ছিলো আরো বীভিষিকাময় কিছু। ঢোল কলমি পোকা নিঃসন্দেহে একটি বিভীষিকাময় ব্যাপার ছিলো।

ঢোলকলমি পোকার কথা আমি পড়েছি সংবাদপত্রে। আমি  তখন কেবল পড়তে শিখেছি।  আপনারা যেনে অবক হবেন যে মাত্র সাত বছর বয়সেই আমি পেপার-পত্রিকা পড়তে শিখে যাই আমাদের বংশে সবচেয়ে কম বয়সে পত্রিকা পড়তে শুরু করার রেকর্ড কার তা অবশ্য জানি না, তবে পরবর্তীতে শুনেছি আমার এই সাফল্যের কথা পাড়া-প্রতিবেশীদের বেশ ঘটা করে বলা হয়েছিলো এখন আমি যখন বিভিন্ন সেমিনারে বক্তৃতা দেই, প্রায়ই উল্লেখ করি মাত্র সাত বছর বয়সে পত্রিকা পড়ে ঢোলকলমি পোকার আগ্রাসন সম্পর্কে  সবাইকে অভিহিত করার সেই সূবর্ণ মুহূর্তের কথা আমার নিজের অবশ্য তেমন স্মৃতি নেই সেই ঘটনাটি সম্পর্কে তবে স্বজনদের কাছে বারবার ঘটনার বিবরণ শুনে মোটামুটি মুখস্থ হয়ে গেছে আমার মুখস্থশক্তি ভালো। বেশ ভালো। মুখস্থশক্তি ভালো না হলে এতদূর আসা সম্ভব হতো না। মুখস্থশক্তি ভালো না হলে আমি সৃজনশীল হতে পারতাম না। আমি সৃজনশীল ছিলাম বলেই গরু, সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা এসব রচনার পাশাপাশি গ্রাম্য মেলা এবং নৌকা ভ্রমণ পর্যন্ত মুখস্থ করে ফেলতাম। যাকগে, কথা হচ্ছিলো ঢোলকলমি পোকা নিয়ে। এখনকার দিনে এমন চমৎকার ঘটনা ঘটতে দেখা যায় না। একটা পোকা মানুষকে এভাবে তটস্থ করে রেখেছে, প্রতিদিন সব নতুন নতুন দারুণ গা হিম করা খবর আসছে, সময়টা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ ছিলো বলাই বাহুল্য! ও আচ্ছা, আসল কথাটাই তো বলা হয় নি এখনও। ঢোল কলমি কিন্তু আসলে পোকা না, একটা গাছের নাম। একটা লতানো গাছ। সেই গাছের পাতায়, ফুলে যে পোকা বসতো তাই হলো ঢোলকলমি পোকা। সেটা যদি গুবড়ে পোকা হয়, তাও ঢোলকলমি পোকা, যদি ঝিঁঝিপোকা হয়, তবুও ঢোলকলমি পোকাই! ভদ্রপোকার এক নাম!
ঘটনাটা ছড়িয়েছিলো এভাবে- বরিশালের কোন এক গ্রামে ঢোলকলমি গাছের কাছে একজন যুবক গেলে তাকে পাতার সাথে লেগে থাকা পোকারা ছেঁকে ধরে, এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল বিষে আক্রান্ত হয়ে মানুষটি মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। আমার স্পষ্ট মনে আছে, মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ার কথাই বলা হয়েছিলো। আমাদের সাংবাদিকেরা মাঝেমধ্যে বেশ চমৎকার অলংকার ব্যবহার করেন সংবাদে। তাদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। যেমন- কোনঠাসা করে ফেলা, সুস্পষ্ট প্রাধান্য বিস্তার করে খেলা, কোনো একটি মহলের ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানানো, ইত্যাদি! সেসময়ের পত্রিকাগুলোর লেখার মধ্যে একটা শিল্প ছিলো। এখনকার অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো শিরোনামতাড়িত। ভেতরে একদম ফাঁপা। কিন্তু তখনকার দিনের সাংবাদিকেরা শিরোনামের পাশাপাশি ঘটনার বিবরণের প্রতিও যথেষ্ট যত্ন নিতেন। খবরের গভীরে ঢুকে আমাদের চিত্তচাঞ্চল্য ঘটতো কেউ একজন জোরে জোরে পড়ে শোনাতো, অন্যরা তখন কাজ বন্ধ করে দিয়ে শুনতো বেশ চমৎকার ব্যাপার এখনকার দিনে যে সমস্ত ব্যাপার চাউর হয়, তার কোনোটাই ঢোলকলমি আতঙ্কের মত এত দীর্ঘমেয়াদী আচ্ছন্নতা সৃষ্টি করতে পারে নি। ব্লু হোয়েল গেমকে আপনি কাছাকাছি অবস্থানে রাখতে পারেন, তবে ঢোলকলমি পোকাকে আমি আমার ব্যক্তিগত পছন্দের এক নাম্বারেই রাখবো।
 আমি তখন মফস্বলে থাকতাম। উত্তরাঞ্চলেরও উত্তরের এক ছোট্ট শহরে। পত্রিকায় পড়ে যতটা না চাঞ্চল্য এবং ভীতি তৈরি হয়েছিলো, তার প্রকৃত সুন্দর রূপ যথাযথ উপভোগ্যতার সাথে ধরা দেয় পরীক্ষা শেষের ছুটিতে ঢাকায় আমার নানাবাড়িতে গেলে। সেখানে ঢোলকলমি পোকার ভয়ানক কার্যক্রম সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিস্তৃত বিবরণ জানতে পেরে আমি ঘটনার গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হই। ঘটনা পত্রিকায় যতটা ছাপা হয়েছে তার চেয়েও ভয়াবহ। এই ঢোলকলমি গাছের পোকাগুলি এসেছে ভারত থেকে। তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মানুষকে নির্বংশ করে দেয়া। যদি আশু ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে এটা করতে তাদের মাত্র দুই মাস লাগবে। কারণ তারা এক মিনিটের ভেতর একশ মানুষ মারতে পারে। আমার এক খালাত ভাইয়ের অংকে মাথা ভালো ছিলো। সে হিসেব করে জানিয়ে দেয় যে এই গতিতে চললে প্রতি ঘন্টায় ৬০০০ মানুষ মারা যাবে। প্রতিদিন মারা যাবে প্রায় এক লক্ষ মানুষ। তার দেশের বাড়ি কুষ্টিয়া হওয়াতে সুন্দর, মিঠে ভাষায় বিস্তৃতভাবে আসন্ন দুর্যোগের বর্ণনা দিতো। শুনে মন জুড়িয়ে যেতো।
-এগুলো হচ্ছে সব কিয়ামতের আলামত বুঝলি? পুকামাকড় সব শক্তিশালী হয়ে যাবে, মাইনষেক নির্বংশ কইরে দেবে। 
-কিন্তু এসব কেন করবে ওরা?
আমার ভীত জিজ্ঞাসা ওকে তৃপ্ত করতো। প্রসন্ন মুখে সে ঘটনার আরো ডিটেইলসে চলে যেতো।
-কেন করবে তা এখনও তোর শোনার বয়স হয় নি। আরেকটু বড় হলি পারে তখন তোকে কতি পারি। এগুলা তো বিশাল ষড়যন্ত্রের ব্যাপার। তোর মাথায় অত কিছু ধরবি নানে। আর বেশি কৌতূহলও কিন্তু খারাপ বুঝলি! তোর মত কৌতূহল দেখাতি যায়ে সেদিন এক বাচ্চা মারা পড়লো। আমার চোখের সামনিই! আমি ওকে সাবধান করিছিলাম যে যাসনি ওকেনে। মুরুবী মাইনষের কতা না শুনলি যা হয়, সে পুকা ধরতে গিয়ে মারা পড়লো বিষের কারণে। এই বিষ সাপের চেয়েও কড়া বুঝলি! সাপের বিষ তাও নামানোর সিটেম আছে। ওঝা আইসে নাবায় দিতি পারে। কিন্তু এই পুকার বিষ নামানোর কুনো উপায়ই নেই। এখনও গবেষণা চলতিছে অবশ্য, তবে আমার কানে যা আয়েছে তাতে এটা কতি পারি যে এইটে বানানো আমগের কম্ম না। জ্বিন ছাড়া এর ওষুধের সন্ধান কেউ দিবের পারবে নানে।  
তার ভীতিকর কথাবার্তা আমাকে এক স্বপ্নের জগতে নিয়ে যেতো। ছোটকাল থেকেই আমি ছিলাম মানবহিতৈষী প্রকৃতির। তাই মানুষ মারা যাবার খবর আমার মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি করার পাশাপাশি তাদের উপকার করার ইচ্ছেও জাগতো কীভাবে এই পোকা থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করে সবার মাথার মুকুট হয়ে উঠবো এসব ভাবতে গেলে আমার পড়াশোনাতেও বিঘ্ন হতে লাগলো।

ঢাকা থেকে আমাদের ছোট্ট শহরে ফেরার পর বাতাসের বেগে খবরটি ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আমি অগ্রনী ভূমিকা রাখলাম। তখন তো দেশে তথ্যপরযুক্তির এত প্রসার ঘটে নি, তাই ক্লিক দিয়ে নিউজ ভাইরাল করার কোনো উপায় ছিলো না। অথচ দেখুন, ভাইরাল করার ক্ষেত্রে সে সময়ের মানুষ যে পিছিয়ে ছিলো তা কিন্তু না! তখন মানুষের মধ্যে একটা বন্ধন ছিলো, একাত্মতা ছিলোতখন সবাই সবার সাথে মিশতো। এখনকার মত এত ইন্ট্রোভার্ট ছিলো না। আমি বাড়িতে ফিরেই প্রথম যে কাজটা করি, তা হলো আমার বন্ধুদের কাছে এই ভয়ংকর দুর্যোগের কথা জানিয়ে দেয়া। তারাও সময়ক্ষেপন না করে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে জানিয়ে দেয়। আমরা আবিষ্কার করি আমাদের মধ্যে কত বিদগ্ধ এবং জ্ঞানী সুধীজন আছেন! তারা এই আক্রমণের কারণ, এর সম্ভাব্য পরিণতি এবং এমন বিপদ সম্পর্কে তাদের পুর্বানুমানের কথা জানিয়ে দেইয় সম্ভ্রম সৃষ্টি করলেন।
 দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের কী করা উচিত তা নিয়ে গভীর আলোচনায় নিমগ্ন হই আমরা। যাদের বাড়ির সামনে ঢোলকলমি গাছ আছে, তারা মহা উৎসাহে এই লতানো গাছটি নিধনে নেমে গেছে। আমাদের বাড়ির সামনে এমন কোনো গাছ ছিলো না বলে সেই সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হই। এর ফলে সম্ভবত আমরা বেশ মনমরা হয়ে পড়ি। তবে নতুন নতুন ঘটনায় রোমাঞ্চিত হয়ে মনমরা ভাব কাটতে সময়ও লাগে না তেমন। খবর আসতে থাকে ঢোলকলমি পোকা আমাদের এখানে তাদের আক্রমন শুরু করেছে মহাসমারোহে। অপমৃত্যুর খবর আসতে থাকে দূর দূর থেকে।
ঢাকায় আমরা ছিলাম মাত্র দুইদিন। এই দুইদিনের চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি উত্তরের সেই শহরটিতে আবার ফিরে যাবার সময় ভাবতে থাকি কীভাবে আমার বন্ধুদের এ সংক্রান্ত নতুন তথ্যগুলি জানিয়ে চমকে দেবো। কিন্তু বাড়িতে ফেরার পর এই চাঞ্চল্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। বিটিভিতে একজন বিজ্ঞানী অথবা অন্য কোনো খাতের জ্ঞানী মানুষ পোকা-পাতা ইত্যাদি নিয়ে এসে স্পর্শ করে দেখিয়ে দিলেন যে এগুলি আদতে বিষাক্ত কিছু নয়। আমরা স্বস্তি পেলাম দেখে। কিন্তু কিছুটা কি আশাহতও হলাম? মনে পড়ছে না ঠিক।
ঢোলকলমি পোকার গুজবের সময়টাতে আরেকটা চমৎকার গল্প চলছিলো। রক্তচোষার গল্প। রক্তচোষারা সূঁই দিয়ে বিশেষ কৌশলে বাচ্চাদের রক্ত টেনে নিচ্ছে, এমন কিছু একটা। তবে যথাযথ প্রচার এবং প্রত্যক্ষদর্শীর অভাবে এটা তেমন সাফল্য অর্জন করতে পারে নি। ঢোলকলমির সাথে যুদ্ধে ব্যাপক ব্যবধানে হেরে যায় রক্তচোষারা। রক্তচোষাদের নিয়ে কোনো টেলিভিশন অনুষ্ঠান হয় নি, পত্রিকাতেও আসে নি। এটা নিঃসন্দেহে একটা অবিচার।  তবে ঢোলকলমি পোকারা চলে গেলেও আমার সাফল্যের পালকে আরো একটি মুকুট যোগ করে যায়। পত্রিকা মারফত ঢোলকলমি গাছের পোকাদের ঘটনাটি সবার আগে জানতে পারার ভাগ্য যেমন আমার ছিলো, তেমনই তাদের চলে যাবার ব্যাপারটাও টেলিভিশনে সবার আগে আমিই দেখি। চিৎকার করে সবাইকে জানিয়ে দেই, “ঢোলকলমি পোকায় ভয় পাবার কিছু নেই! টিভিতে একটা লোক এসে ধরছে নিজ হাতে!”। এর ফলে যা হল, একজন সমঝদার এবং চালু শিশু হিসেবে আমার নাম প্রচারিত হতে লাগলো পাড়ায়। আমার পরিবারের সদস্যরা আমাকে নিয়ে গর্ব করার বেশ কিছু কারণ খুঁজে পেলেন, এবং নতুন কারো সাথে দেখা হলেই আমার সাফল্যের কথা বিতং করে জানিয়ে দিলেন। এত আমি বেশ উৎসাহিত হলাম। যার প্রভাব পড়লো পড়াশোনাতেও। আগেই বলেছি, আমার মুখস্থশক্তি বেশ ভালোআট বছর বয়সেই আমি প্রায় একশটি দেশের রাজধানী এবং মুদ্রার নাম নির্ভুলভাবে মুখস্থ করে ফেললাম। সেই সময় একটা চমৎকার এক্সপেরিমেন্ট আমাদের প্রায় সবাইকেই করতে হয়েছে। সূর্যের আলোর প্রভাবে পৃথিবীতে দিন এবং রাত আসে, এটি বোঝার জন্যে একটি গ্লোবকে মোমবাতির সামনে রাখা হতোমোমবাতিটিকে বলা হতো সূর্য। গ্লোবের অর্ধেক অংশ থাকতো আলোকিত, আর বাকি অর্ধেক থাকতো অন্ধকারে। গ্লোবটিকে ঘুরিয়ে দিলে আলো-অন্ধকার অংশগুলো পরিবর্তিত হতে থাকতো। এ থেকে আমরা বুঝতে পারতাম কীভাবে দিন এবং রাত হয়। আমি অবসর সময়ে গ্লোবটি নেড়েচেড়ে দেখতাম। ফলে দেশ-মহাদেশ-মহাসাগর ইত্যাদি নিয়ে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি হয়আর তাই সাধারণজ্ঞান বইয়ের দেশের মুদ্রা এবং রাজধানী অংশটি আমি খুব সহজেই মুখস্থ করতে পারি। গরুর রচনা এবং ইংরেজিতে লিভ অফ এবসেন্সের আবেদনপত্র লেখার চেয়ে দেশের রাজধানী এবং মুদ্রার নাম আমার বেশি সহজে মুখস্থ হতো। অস্বীকার করা দোষের হবে, আমার আজকের সাফল্যের পেছনে ক্লাশ থ্রির সাধারণ জ্ঞান বইটি যথেষ্ট কাজে লেগেছে এই একটি বই যদি আপনি ঠিকঠাকমত পড়েন, আপনার ভবিষ্যতে নানাভাবে উপকার হবে বিভিন্ন ধরণের ইন্টারভিউ, পরীক্ষার জন্যে আজকাল অনেককেই কোচিং করতে দেখি এসব হচ্ছে বেসিক ঠিক না থাকার ফল আমার বেসিক ভালো, আমি প্রচুর দেশের মুদ্রা এবং রাজধানীর নাম নয় বছর বয়সেই মুখস্থ করতে পেরেছিলাম, এছাড়া প্রতিটি শ্রেণীতেই সাধারণ জ্ঞান বই থেকে সাহিত্যিকদের ছদ্মনামসহ আরো বিভিন্ন তথ্য নিষ্ঠার সাথে মুখস্থ করেছি বেসিক, সবই বেসিক আজ এই যে আমি রকেট সায়েন্টিস্ট তৈরি করার প্রকল্পে কাজ করছি, এর পেছনে ত্যাগ তিতিক্ষা তো কম নেই! শুধুমাত্র নাম-দেশ-ফল-ফুল খেলার জথা বলছি কেন! আমি একে একে সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো গরু থেকে শুরু করে নৌকাভ্রমণ, কিছুই বাদ যাবে না আপনারা ভাবছেন রকেট সায়েন্সের সাথে গরু কোথা থেকে এলো? সবই কানেক্টেড লেট মি এক্সপ্লেইন!

(ছবি- রুপম) 

Comments

Popular posts from this blog

প্যাথেটিক হোমিওপ্যাথি, কেন বিশ্বাস রাখছেন!

ইলুমিনাতি, একটি মার্কেটিং টুল; অথবা ছহি ইলুমিনাতি শিক্ষা

জ্বী না, সিয়েরালিওনের দ্বিতীয় ভাষা বাংলা নয়!