প্যারানয়েডের ডিফেন্স মেকানিজম
মায়া আপা পান খেতে খেতে গল্প করছেন। পানের পিকজনিত রক্তিমতায় লাল ঠোঁটদুটো আরো লাল হয়ে উঠেছে। আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছেন তিনি। আমি তার খুব কাছেই বসা। ইচ্ছে করলেই ছুঁয়ে দিতে পারি তার নরম গাল, অথবা আরও একটু সাহসী হলে.........
কলিংবেলের শব্দে কল্পনা থেকে কুৎসিত বাস্তবে ফিরে এলাম। নিশ্চয়ই কোন অপদার্থ হোমসার্ভিসের ছোকড়া, নাকি আমার কোন বন্ধু বান্ধব, নাকি আত্নীয় স্বজন? নাকি ময়লার ঝুড়ি নেবার লোক?
আমি দরজা খুললাম। ফিটফাট পোষাকে ও কে দাঁড়িয়ে? এ আমার কোন বন্ধু নয়।
ময়লার ঝুড়ি নেবার লোক।
"ভালো আছিস?" ময়লার ঝুড়ি নেবার লোকটা জিজ্ঞেস করল।
আমি তার ঈষৎ ফাঁক হওয়া স্মিতহাস্যমুখে ময়লা ঢেলে দিলাম।
সে আনন্দ পেল। সে আমার ঘরে প্রবেশ করল।
"খালাম্মারা কোথায় রে?" আমি তার দিকে তাকালাম। তার চোখে খুনীর দৃষ্টি। ওর চোখটা আয়না। আমার রোমকূপ দাঁড়িয়ে গেছে। আমি অস্থির এবং আতঙ্কিত বোধ করছি। আমাকে বাঁচানোর কি কেউ নেই? নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। বুকটা যেন পাথর।আমি অসহায় দৃষ্টিতে চারিপাশে তাকাচ্ছি সাহায্যের জন্যে। হঠাৎ দেখলাম মায়া আপা চলে এসেছে।
মায়া আপা চলে এসেছে!
আমি জানতাম সে আসবে। সবসময়ই আসে। হুফফফফ। জমে থাকা নিঃশ্বাসকে উড়িয়ে দিলাম সিগারেটের ধোঁয়ার মত।
মায়া আপা খুব ভালো চা বানাতে পারে। আমি আমার বন্ধু সাহেদের সাথে বসে এখন চা খাচ্ছি। মায়া আপার বানানো।
বেশিক্ষণ থাকিসনা! বেশিক্ষণ থাকিসনা। বেশিক্ষণ থাকিসনা ইউ ফাকিং ইডিয়ট! ইউ আর গেটিং অন মাই নার্ভস। সাহেদকে কোথায় দেখেছিলাম যেন? সেদিন রাস্তার ধারে ঐ নেড়ী কুত্তাটাই সাহেদ ছিলোনা? ঘেউ ঘেউ করছিলো? আর আমার ভয় করছিলো খুব। আমি কুকুর ভয় পাই। গেট লস্ট! মায়া আপা চলে যাচ্ছে, আমার ভয় করে , ভয় করে, ভয় করে...
সাহেদ ক্রমশঃ হিংস্র হয়ে উঠছে। আমি দেখেছি সন্ধ্যা হবার পরে বেশিরভাগ মানুষই হিংস্র হয়ে যায়। ড্রাকুলার মত। সবাই নিঃশব্দ ঘাতক হয়ে যায়। সাহেদ এখন সশব্দ ঘাতক।
ঘেউ ঘেউ ঘেউ! দাঁত খিঁচিয়ে চলছে সে। কি কুতসিৎ, আর ভয়ংকর! আমি মনেপ্রাণে মায়া আপার মুখটা মনে করার চেষ্টা করছি। সে সবসময় আসেনা। তারও তো ঘুম আছে। কাজকম্ম আছে। রাতে বেলায় স্বামীসোহাগীনি হবার খায়েশ আছে....
আবার! আবার আমার মাথায় চিন্তার চাবুক, সপাং! এবার আমি হিংস্র হয়ে উঠি। ঐ কথাটা (নাহ কোন কথাটা, সেটা বলা যাবেনা) মনে হলেই আমি হিংস্র হয়ে উঠি।
সাহেদের পশ্চাদ্দেশে এক লাথি দিয়ে বিদেয় করে দিলাম।
"ভালো থাকিস, আবার দেখা হবে" যাবার সময় সে হ্যান্ডশেক করল।
(২)
সে থাকে আমাদের আশেপাশেই। সে দুপুরবেলায় চুল শুকোতে ছাদে আসতো। আমি এই মুহুর্তটার জন্যে ক্লাশে যাওয়া বাদ দিয়ে বাড়ান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতাম। দুপুরের তেতে ওঠা রাগী সূর্যটার সাথে বচসা করতামনা মোটেও। বিকেলের দিকে আমার মায়ের সাথে গল্প করতে আসতো মায়া আপা। অল্পবয়সেই পান খাওয়া শিখে গিয়েছিলো। আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম। বেশি না। অল্প অল্প। আমার দিকে সে একবার তাকিয়েছিলো। তখন আমি ক্লাশে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম বিরক্তিকর পদার্থবিদ্যা শিক্ষককে। মায়া আপা হেসেছিলো বেশ। এসব কারণেই মায়া আপাকে ভালো লাগতো আমার। আমি যখন যেটাই করি তার নজর থাকবেই। কিছুই এড়িয়ে যাবেনা। অথচ তখন হয়তোবা তার চুলোয় ভাত পুড়ে যাচ্ছে, কিংবা নবজাতক সন্তান স্তনবৃন্ত খুঁজে বেড়াচ্ছে....
(৩)
নাহ...আমার ব্যাপারটা প্লেটোনিক না।
(৪)
-যাবি না?
-না।
-তোর যাওয়া উচিত। আমরা কেউ যেহেতু যেতে পারছিনা, একজন না গেলে খারাপ দেখায়।
-ভালো লাগেনা।
-না লাগলেও যা, বাবা। এরকম আলসেমী করলে হয়? সারাক্ষণ তো ঘরেই থাকিস। কি ভাবিস অত?
-আচ্ছা যাবো।
(৫)
মায়া আপার বিবাহবার্ষিকী আজকে। সে নিশ্চয়ই নানারকম আহ্লাদ করবে তার স্বামীর সাথে। উপস্থিত জনতা হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করবে দাম্পত্য জীবনের নিখুঁত ,সুখী অভিনয়শিল্প দেখে। সেটাই স্বাভাবিক, ওরা তো আর জানেনা যে...
গান বাজছে। গান বাজছে । " আমি জানি তুমি কোথায় যাও রোজ রাত্তিরে মনের ভেতর ঘুমের ঘোরে/ তোমার সাজানো শরীরের ভেতরে মায়া, তুমি কে?"
লিরিকটা পাল্টে গেছে। ইদানীং সব কিছু খুব পাল্টে যাচ্ছে। গানটায় আগে অন্য মেয়ের নাম ছিলো। এখন সবকিছু মায়াময়। মায়াময়.... হাহা! অনেকদিন পরে হাসলাম। মায়া আপাকে সুন্দর লাগছে দেখতে। নিজের পছন্দের মেয়েটা সুন্দর করে সাজলে যে কারুরই ভালো লাগবে। আজকে একটা হেস্তনেস্ত করে ছাড়বো। সবার সামনে বলে দেবো আসল ঘটনাগুলো। মায়া আপা আর আমার সম্পর্কটা প্রকাশ্যে আনার সময় হয়ে এসেছে। আর লুকোচুরি না। এখন থেকে আমি মায়া আপাকে শুধু মায়া বলে ডাকবো। মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো এসব সুখকল্পনায় মজে থেকে।
"এই শুভ অনুষ্ঠানে একটা অত্যন্ত শুভ সংবাদ আছে আমাদের তরফ থেকে। আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে, আমরা ম্যারিকাতে মুভ করার ট্রাই করছিলাম, তো সম্প্রতি...."
কি বলছে উজবুকটা? ইজ হি আউট অফ হিজ ফাকিং মাইন্ড?
"কংগ্রাচুলেশনস"
"আপনারা ভাগ্যবান, এ্যামেরিকা হল স্বপ্নের দেশ"
ভিসা হয়ে গেছে? বাহ! এখন কি করবে তুমি মিস্টার ওয়াহিদুল গনি? মায়াকে নিয়ে উড়াল দিবে? আমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবে? হাস্যকর চিন্তাভাবনা। মায়াও দেখি খুব হাসছে। নকল হাসি, যে কেউ খেয়াল করলেই বুঝবে। এসব আর বরদাস্ত করা যায়না। কোকের বোতলটা ভেঙে ধারাল অংশটা গলায় ঢুকিয়ে দিলাম লুচ্চাটার গলায়। এরপর মায়ার হাত ধরে বিজয়ীর বেশে ফিরে এলাম। আ পিস অফ কেক।
(৬)
শহরে খুনীর সংখ্যা বেড়ে গেছে ইদানীং। ওয়াহিদুল গনি নামের লোকটাকে প্রতিদিন খুন করে একজন। আমিই তো! বেশ পাকা খুনী হয়ে গেছি। গভীর রাতে আমি আমার ছুরিতে ধার দেই, পালিশ করে চকচকে করি, এর সাদাদেহে রক্তের কালচে রঙ লাগলে কত সুন্দর লাগবে ভেবে হাসি। মিস্টার ওয়াহিদুল গনির মরণ চিৎকার আমার কামুক মেয়েদের সঙ্গমকালীন শীৎকারের চেয়েও উত্তেজক মনে হয়। মায়া আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু বলেনা। ওর কি কষ্ট হয়? ওর চোখে কেন মরামাছের মত নির্বাক দৃষ্টি? মায়া ক্রমশঃ আবছা হতে থাকে। আমার রাগ হয় ভীষণ। আমি এখন আর ছুঁতে পারিনা ওকে।
(৭)
-যাবি না?
-না।
-তোর যাওয়া উচিত। আমরা কেউ যেহেতু যেতে পারছিনা, একজন না গেলে খারাপ দেখায়।
-ভালো লাগেনা।
-না লাগলেও যা, বাবা। এরকম আলসেমী করলে হয়? সারাক্ষণ তো ঘরেই থাকিস। কি ভাবিস অত?
আমাকে কেউ এখন আর কোথাও যেতে বলেনা। আমার কাছে কেউ আসেওনা। গল্পের শেষে সবাই মারা যায়, শুধু নায়ক বেঁচে থাকে। আমি সবাইকে খুন করে ফেলেছি। উপায় ছিলোনা কোন। আমি সবসময় নায়ক হতেই চেয়েছিলাম। আমি এখন তা হতে পেরেছি। সমাপ্তিটা চমৎকারভাবে করতে পেরেছি এতেই আমার আনন্দ।
কলিংবেলের শব্দে কল্পনা থেকে কুৎসিত বাস্তবে ফিরে এলাম। নিশ্চয়ই কোন অপদার্থ হোমসার্ভিসের ছোকড়া, নাকি আমার কোন বন্ধু বান্ধব, নাকি আত্নীয় স্বজন? নাকি ময়লার ঝুড়ি নেবার লোক?
আমি দরজা খুললাম। ফিটফাট পোষাকে ও কে দাঁড়িয়ে? এ আমার কোন বন্ধু নয়।
ময়লার ঝুড়ি নেবার লোক।
"ভালো আছিস?" ময়লার ঝুড়ি নেবার লোকটা জিজ্ঞেস করল।
আমি তার ঈষৎ ফাঁক হওয়া স্মিতহাস্যমুখে ময়লা ঢেলে দিলাম।
সে আনন্দ পেল। সে আমার ঘরে প্রবেশ করল।
"খালাম্মারা কোথায় রে?" আমি তার দিকে তাকালাম। তার চোখে খুনীর দৃষ্টি। ওর চোখটা আয়না। আমার রোমকূপ দাঁড়িয়ে গেছে। আমি অস্থির এবং আতঙ্কিত বোধ করছি। আমাকে বাঁচানোর কি কেউ নেই? নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। বুকটা যেন পাথর।আমি অসহায় দৃষ্টিতে চারিপাশে তাকাচ্ছি সাহায্যের জন্যে। হঠাৎ দেখলাম মায়া আপা চলে এসেছে।
মায়া আপা চলে এসেছে!
আমি জানতাম সে আসবে। সবসময়ই আসে। হুফফফফ। জমে থাকা নিঃশ্বাসকে উড়িয়ে দিলাম সিগারেটের ধোঁয়ার মত।
মায়া আপা খুব ভালো চা বানাতে পারে। আমি আমার বন্ধু সাহেদের সাথে বসে এখন চা খাচ্ছি। মায়া আপার বানানো।
বেশিক্ষণ থাকিসনা! বেশিক্ষণ থাকিসনা। বেশিক্ষণ থাকিসনা ইউ ফাকিং ইডিয়ট! ইউ আর গেটিং অন মাই নার্ভস। সাহেদকে কোথায় দেখেছিলাম যেন? সেদিন রাস্তার ধারে ঐ নেড়ী কুত্তাটাই সাহেদ ছিলোনা? ঘেউ ঘেউ করছিলো? আর আমার ভয় করছিলো খুব। আমি কুকুর ভয় পাই। গেট লস্ট! মায়া আপা চলে যাচ্ছে, আমার ভয় করে , ভয় করে, ভয় করে...
সাহেদ ক্রমশঃ হিংস্র হয়ে উঠছে। আমি দেখেছি সন্ধ্যা হবার পরে বেশিরভাগ মানুষই হিংস্র হয়ে যায়। ড্রাকুলার মত। সবাই নিঃশব্দ ঘাতক হয়ে যায়। সাহেদ এখন সশব্দ ঘাতক।
ঘেউ ঘেউ ঘেউ! দাঁত খিঁচিয়ে চলছে সে। কি কুতসিৎ, আর ভয়ংকর! আমি মনেপ্রাণে মায়া আপার মুখটা মনে করার চেষ্টা করছি। সে সবসময় আসেনা। তারও তো ঘুম আছে। কাজকম্ম আছে। রাতে বেলায় স্বামীসোহাগীনি হবার খায়েশ আছে....
আবার! আবার আমার মাথায় চিন্তার চাবুক, সপাং! এবার আমি হিংস্র হয়ে উঠি। ঐ কথাটা (নাহ কোন কথাটা, সেটা বলা যাবেনা) মনে হলেই আমি হিংস্র হয়ে উঠি।
সাহেদের পশ্চাদ্দেশে এক লাথি দিয়ে বিদেয় করে দিলাম।
"ভালো থাকিস, আবার দেখা হবে" যাবার সময় সে হ্যান্ডশেক করল।
(২)
সে থাকে আমাদের আশেপাশেই। সে দুপুরবেলায় চুল শুকোতে ছাদে আসতো। আমি এই মুহুর্তটার জন্যে ক্লাশে যাওয়া বাদ দিয়ে বাড়ান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতাম। দুপুরের তেতে ওঠা রাগী সূর্যটার সাথে বচসা করতামনা মোটেও। বিকেলের দিকে আমার মায়ের সাথে গল্প করতে আসতো মায়া আপা। অল্পবয়সেই পান খাওয়া শিখে গিয়েছিলো। আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম। বেশি না। অল্প অল্প। আমার দিকে সে একবার তাকিয়েছিলো। তখন আমি ক্লাশে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম বিরক্তিকর পদার্থবিদ্যা শিক্ষককে। মায়া আপা হেসেছিলো বেশ। এসব কারণেই মায়া আপাকে ভালো লাগতো আমার। আমি যখন যেটাই করি তার নজর থাকবেই। কিছুই এড়িয়ে যাবেনা। অথচ তখন হয়তোবা তার চুলোয় ভাত পুড়ে যাচ্ছে, কিংবা নবজাতক সন্তান স্তনবৃন্ত খুঁজে বেড়াচ্ছে....
(৩)
নাহ...আমার ব্যাপারটা প্লেটোনিক না।
(৪)
-যাবি না?
-না।
-তোর যাওয়া উচিত। আমরা কেউ যেহেতু যেতে পারছিনা, একজন না গেলে খারাপ দেখায়।
-ভালো লাগেনা।
-না লাগলেও যা, বাবা। এরকম আলসেমী করলে হয়? সারাক্ষণ তো ঘরেই থাকিস। কি ভাবিস অত?
-আচ্ছা যাবো।
(৫)
মায়া আপার বিবাহবার্ষিকী আজকে। সে নিশ্চয়ই নানারকম আহ্লাদ করবে তার স্বামীর সাথে। উপস্থিত জনতা হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করবে দাম্পত্য জীবনের নিখুঁত ,সুখী অভিনয়শিল্প দেখে। সেটাই স্বাভাবিক, ওরা তো আর জানেনা যে...
গান বাজছে। গান বাজছে । " আমি জানি তুমি কোথায় যাও রোজ রাত্তিরে মনের ভেতর ঘুমের ঘোরে/ তোমার সাজানো শরীরের ভেতরে মায়া, তুমি কে?"
লিরিকটা পাল্টে গেছে। ইদানীং সব কিছু খুব পাল্টে যাচ্ছে। গানটায় আগে অন্য মেয়ের নাম ছিলো। এখন সবকিছু মায়াময়। মায়াময়.... হাহা! অনেকদিন পরে হাসলাম। মায়া আপাকে সুন্দর লাগছে দেখতে। নিজের পছন্দের মেয়েটা সুন্দর করে সাজলে যে কারুরই ভালো লাগবে। আজকে একটা হেস্তনেস্ত করে ছাড়বো। সবার সামনে বলে দেবো আসল ঘটনাগুলো। মায়া আপা আর আমার সম্পর্কটা প্রকাশ্যে আনার সময় হয়ে এসেছে। আর লুকোচুরি না। এখন থেকে আমি মায়া আপাকে শুধু মায়া বলে ডাকবো। মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো এসব সুখকল্পনায় মজে থেকে।
"এই শুভ অনুষ্ঠানে একটা অত্যন্ত শুভ সংবাদ আছে আমাদের তরফ থেকে। আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে, আমরা ম্যারিকাতে মুভ করার ট্রাই করছিলাম, তো সম্প্রতি...."
কি বলছে উজবুকটা? ইজ হি আউট অফ হিজ ফাকিং মাইন্ড?
"কংগ্রাচুলেশনস"
"আপনারা ভাগ্যবান, এ্যামেরিকা হল স্বপ্নের দেশ"
ভিসা হয়ে গেছে? বাহ! এখন কি করবে তুমি মিস্টার ওয়াহিদুল গনি? মায়াকে নিয়ে উড়াল দিবে? আমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবে? হাস্যকর চিন্তাভাবনা। মায়াও দেখি খুব হাসছে। নকল হাসি, যে কেউ খেয়াল করলেই বুঝবে। এসব আর বরদাস্ত করা যায়না। কোকের বোতলটা ভেঙে ধারাল অংশটা গলায় ঢুকিয়ে দিলাম লুচ্চাটার গলায়। এরপর মায়ার হাত ধরে বিজয়ীর বেশে ফিরে এলাম। আ পিস অফ কেক।
(৬)
শহরে খুনীর সংখ্যা বেড়ে গেছে ইদানীং। ওয়াহিদুল গনি নামের লোকটাকে প্রতিদিন খুন করে একজন। আমিই তো! বেশ পাকা খুনী হয়ে গেছি। গভীর রাতে আমি আমার ছুরিতে ধার দেই, পালিশ করে চকচকে করি, এর সাদাদেহে রক্তের কালচে রঙ লাগলে কত সুন্দর লাগবে ভেবে হাসি। মিস্টার ওয়াহিদুল গনির মরণ চিৎকার আমার কামুক মেয়েদের সঙ্গমকালীন শীৎকারের চেয়েও উত্তেজক মনে হয়। মায়া আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু বলেনা। ওর কি কষ্ট হয়? ওর চোখে কেন মরামাছের মত নির্বাক দৃষ্টি? মায়া ক্রমশঃ আবছা হতে থাকে। আমার রাগ হয় ভীষণ। আমি এখন আর ছুঁতে পারিনা ওকে।
(৭)
-যাবি না?
-না।
-তোর যাওয়া উচিত। আমরা কেউ যেহেতু যেতে পারছিনা, একজন না গেলে খারাপ দেখায়।
-ভালো লাগেনা।
-না লাগলেও যা, বাবা। এরকম আলসেমী করলে হয়? সারাক্ষণ তো ঘরেই থাকিস। কি ভাবিস অত?
আমাকে কেউ এখন আর কোথাও যেতে বলেনা। আমার কাছে কেউ আসেওনা। গল্পের শেষে সবাই মারা যায়, শুধু নায়ক বেঁচে থাকে। আমি সবাইকে খুন করে ফেলেছি। উপায় ছিলোনা কোন। আমি সবসময় নায়ক হতেই চেয়েছিলাম। আমি এখন তা হতে পেরেছি। সমাপ্তিটা চমৎকারভাবে করতে পেরেছি এতেই আমার আনন্দ।
Comments
Post a Comment