আগন্তুকনামা

আমাদের পাড়ায় নতুন কোন আগন্তুক এলে
আমরা তাকে বাজিয়ে দেখি
জঙ ধরা ভায়োলিনে কর্কশ সুর বাজে
পাড়ার চায়ের দোকানে তাকে নিয়ে সরগরম পরিকল্পনা হয়
তার পোষাক-আষাক, মুদ্রাদোষ, খাদ্যাভ্যাস...
আমাদের সাথে ব্যত্যয় ঘটলে তাকে অচ্ছ্যুত ভেবে অশ্রূতপূর্ব কিছু খিস্তি শুনিয়ে দিই
মহল্লার উঠতি বয়সী ছোকড়ারা নতুন স্ল্যাং সৃজনে মেতে ওঠে,
বয়োজৈষ্ঠরা পান চিবুতে চিবুতে আস্কারাময় সমালোচনা করে,
বারান্দা দিয়ে উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে মেয়ের দল
হঠাৎ কোন একদিন...
তাদের চুলের বিনুনী বেয়ে নেমে আসে অজগর সাপ
হিলহিলিয়ে
হিসহিসিয়ে
সম্মোহনকুয়াশা ঝরে পড়ে তাদের চোখ বেয়ে
ভরদুপুরে কুয়াশার আগমনে ঝটপট ঝাঁপি ফেলে দেয় দোকানীরা।
এলাকা জুড়ে তখন তোলপাড় শুরু হয়,
মোড়ে মোড়ে সতর্ক সিগন্যাল বাতি স্থাপন করে প্রবীনেরা
আগন্তূক বনাম অজগর খেলায় কেউ জেতেনি কখনও
তাই সহাবস্থানের নীতি মেনে নিয়ে,
পরিত্যক্ত ঝিলের ধারে স্থায়ী বাসিন্দারা অতিথি সাপ হয়ে অবস্থান নেয়।
এগুতে থাকে গুড়ি মেরে
একটা ব্যাঙ বা ইঁদুরের অপেক্ষায়।
বছরখানেক পরে কিছু একটা পেয়ে গেলে
ক্ষুধার্ত পাকস্থলী সংযমের নিয়ম ভোলেনা
অর্ধেকটা খেয়ে বাকিটুকু ছুড়ে দেয়
অপেক্ষমান বালিকাশোভিত ব্যালকনিতে।

Comments

Popular posts from this blog

প্যাথেটিক হোমিওপ্যাথি, কেন বিশ্বাস রাখছেন!

মৃতবৎসা জোছনার কাল

তোমার জন্যে শুভ্র গোলাপ, বেড়ালতমা -হামিম কামাল