একটি আধিঅলৌকিক প্র‌্তিহিংসার পদ্য

জ্বী স্যার, ঠিকাছে, মেনে নিয়েছি এই রায়
কিছু হুজুগে উটকো দেশপ্রেমিকের মৌসুমী আবেগের প্রতিবাদ যাক বৃথায়!
ফেলানী নাম্নী দরিদ্র, শীর্ণবালিকাটিকে মেরে তারকাঁটায় ঝুলাতে
সীমান্তরাক্ষী জওয়ানের পুরুষত্ব প্রকাশের এই সুযোগ আপনারা করে দিয়েছেন ,মহান!
তবে
দুর্ঘটনা তো হতেই পারে তো, পারে না?
অমীয় ঘোষ নামক নির্দোষ ব্যক্তিটির ঝুম নেশা চেপে গেলে ছাড়বেনা, ছাড়েনি।
কেনই বা ছাড়বে! কেই তাতিয়ে!
জীবনের দাম লিপিবদ্ধ করার নথিতে হিসেবের বাকি আছে আরো কত কী!
ফেলানি কাঁটাতারে, সেলানি কারাগারে হত্যার লিস্টে আরো কত বাকি!
খুন হোক, ধর্ষন হোক গাছতলা বা কাঁটাতারে ঝুলিয়ে শেষকৃত্যের মহান আয়োজন তো করবেনই দাদারা!
এমন কী আদালতে সালিশ বসানোর মতো মহানুভবতাও
করতে দ্বিধা করেন নি।
কাঁটাতারে ঝুলিয়ে দিন, বৃক্ষে ঝুলিয়ে দিন, বেয়নেটে বিক্ষত করুন, সহায়তা লাগলে জানাবেন, আমরা তো ভৃত্য!
আমৃত্যু!
বিনিময়ে একটা ফৌজদারি মামলা দিলে পরেই আমরা খুশি!
অবশ্য তার যে খুব দরকারও আছে তা না! জানি তো এসবই আই ওয়াশ।
চোখ দুটো এখনও ভালোভাবে ধুইয়ে নিতে আই ওয়াশের বিকল্প নেই
আরো কিছু হত্যা, আরো কিছু প্রহসন
ঘোলাচোখে দেখাটা ভালো মনোরঞ্জোন
চক্ষু যদিও ঢাকা, ফর্মালিটিস নেই ফাঁকা
প্লিজ দেখে নিয়েন ফেসবুকে আমার নিউজ ফিড
জ্বালাময়ী স্ট্যাটাসে দেখে ভড়কাবেন না দাদা, আমরা নেহেয়েতই কিড!
কিড হয়ে খেলবো দুধভাত, জওয়ানেরা চালিয়ে যান ম্যাসাকার!
আমরা হারাবো, আমরা ভুলে যাবো দুর্জয় বাঙালির চেতনা
আমাদের মন্ত্রনালয়ের ভাঁড়েরা জামাইষষ্ঠীতে ইলিশ পাঠাবে
ট্রানজিট আর পানি বন্টনের খেলায় দুধভাত হবে।
আর ফেলানীর কাঁটাবিদ্ধ লাশ তাদের কানের দুল হিসেবে শোভাবর্ধন করবে।
শিশুপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ!
তবে দাদা জানেন কী ,শিশুরাও বড় হয়
শিশুদের আবেগে নেই কোন ভণিতা
কে কবে দুধভাতে বিষ মেশাবে, সুস্বাদু রইবে না আর
ডিনারে অতিভোজনে হজমে গড়বড় হলে পাবেন না নিস্তার!
ফেলানীর ভাইয়েরা মেটে কৃষক থেকে হন্তারক হতে পারে
বাইচান্স কেউ মারা গেলে মামলা করে দিয়েন
তারপর বিচারকের বিভীষিকা, এইবার ন্যায়বিচার না হয়ে যাবে কোথায়!
হিংস্র শৃগালের জন্যে নো মার্সি।
সীমান্ত বন্ধ করে খুনচোখে খুলে রাখবো শার্সি।
কাঁটাতার, পয়েন্ট রেঞ্জ শ্যুট এত সহজে ভুলে যাওয়া যায় নাকি!
ফেলানীর কাঁটাতার, রক্ত রঙবাহার খুব ভালো স্যুভনির নয়
ভদ্রতাবশত আমরাও একদিন মুছে ফেলবো সংশয়
মরে যেও,মেরে যেও, নো ম্যানস ল্যান্ডে হুটোপুটি করো
রক্তস্বাদের ঝাঁঝালো পানীয় শেষতক আমরাই পাবো।
এরপর তোমাদের পরাজিত ব্যাটেলিয়ানের কাজটা সহজ, তবে পরিশ্রমী।
৪২ বছরের রক্ত পরিষ্কার করে গোসল করে হরে কৃষ্ণ বলে পুজো অর্চনা করবি
আমাদের সতর্ক চোখ তখন হিসেব নিকেশে ব্যস্ত থাকবে...
"রক্তের দাগ এখনও সীমান্তে মুছে যায় নি..."

Comments

Popular posts from this blog

প্যাথেটিক হোমিওপ্যাথি, কেন বিশ্বাস রাখছেন!

মৃতবৎসা জোছনার কাল

তোমার জন্যে শুভ্র গোলাপ, বেড়ালতমা -হামিম কামাল